অস্তমিত

(প্রতিবাদী শিক্ষক বরুন বিশ্বাস স্মরণে)

অমিত কুমার বর, খেজুরী, পূর্ব মেদিনীপুর  ##


অস্তমিত সুর্যের বুকে দাগ
ফিকে হল গাঢ় রক্তাভ রং।
সন্ধ‍্যাকালে প্রেতপুরীর পিশাচ
রক্তলোভে সাজিয়াছে ক্রুর সং।
হেনকালে ইস্টিশনের মাঝে
গর্জে ওঠে বন্দুকের ঐ নল!
দেবতা লুটায় গোবরডাঙা’র কোলে
রক্তস্নাত মাতৃ চরণতল।

মা-বোন তুমি ক্রীড়ার বস্তু
আর প্রতিবাদ হবে না!
নর্দমা-কীট শরীর দুষবে
প্রতিষেধক আর পাবেনা!
আবার কত ফোটকে,রাজু
নর-খাদকের জাত।
ভেঙে-চুরে গুঁড়িয়ে দেবে
প্রতিবাদীর ঐ হাত।

প্রতিবাদ তুমি করেছিলে,
শিখিয়েছিলে ভাষা।
চাষীর ছেলে মাটির মানুষ
শেখালে ভালোবাসা।
ইছামতী,যমুনার জলে
‘সুটিয়া’ ভাসতো বলে।
বন‍্যা রোধে,খাল কাটতে
তুমিই এগিয়ে এলে।

অসহায়দের সহায় ছিলে
অপরাধীদের যম।
মা-বোনদের আব্রু-ইজ্জত
বাঁচিয়েছো কি তুমি কম!
তোমার বীরত্বের আগুন জ্বলেছে
ধর্ষনকারীর চিতায়।
অন্ধকারে আলো জ্বেলেছো
সেদিনের ‘সুটিয়ায়’।

পৃথিবী চায় বীরের রক্ত
লিখতে যে বীরগাথা।
বিনাশকারীর বিনাশের তরে
পাঠায় পরিত্রাতা।
তুমি এসেছিলে বীর,ধরনীতে
তুমি আছো, তুমি রবে।
শিরায় শিরায় উন্মাদনা
আপনি জাগুক হবে।

কিন্তু যে হায়,নেই কোথাও
প্রতিবাদীর স্বর।
অন্ধকারে ডুবছে মানুষ
পাপ-স্রোত নির্ঝর।
মানসিকতা তলানিতে ঠেকে
সমাজে ধরেছে ঘুন।
যুগ কেটেছে তরুণ এসেছে
আসেনি তো সেই বরুণ!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − seventeen =