ডল কে চল

তাপস মুখোপাধ্যায় ##

ডল কে চল – ১

সত্যি করে বল করিস নে মা ছল

কোন তাগিদে চলে গেলি ছেড়ে মোদের দল।

পায়ে পায়ে চলার তরে মিলেছিলি সব সাথে

কোন সে পথে দিলিরে পারি, অন্ধকার রাতে।

ছোট্ট থেকে চোখের সামনে উঠলি মা তুই বেড়ে

কত যুদ্ধ জয় করে তুই কেমনে গেলি হেরে।

এ হার নয়রে শুধু তোর, এ মোদেরও পরাজয়

ছিনিয়ে আনতে পারিনি মোরা ব্যার্খ মোদের জয়।

জন্ম দিলি ছোট্ট সোনা সে এক রাজ পুত্তুর-রে

মাতৃ স্নেহে পাললি তাকে আগলে বুকে ধরে।

মাতৃ বাঁধন কাটিয়ে তুই কোথা চলে গেলি

সকল কিছু আপন যা তোর সরিয়ে দূরে ঠেলি।

সত্যি মা গেছিস কোথা, না-কি আছিস বসে আড়ে

আমরা কেমন ঘাবরে আছি দেখছিস ঠারে ঠারে।

অনেক তো ঘুম হলো মা. এবার এখনি উঠে পর

ফাগ ফাগুনের প্রভাত ফেরি যেতে হবে ঘর ঘর।

ডল কে চল

কত মানুষ সমাগত স্মরণে বরণে তোর –

রক্ত গোলাপে সাজিয়ে সন্ধ্যা আলোকজ্জ্বল ভোর।

চুপটি করে শুনছি বসে, তোর কীর্তি গাঁথা

খামতি কোথাও নেই যেন এক সুরেতেই বাঁধা।

হাতে আমার খোলা চিঠি তোর জন্যে লেখা,

ঘোষিকাকে দিতে গিয়ে, সঞ্জিতকে দেখা।

ওর কথায় বলতে গিয়ে শব্দ গেল হারিয়ে

বলা না বলার সাথে পড়েছি চিঠি দাঁড়িয়ে।

কত কিছুই বলার ছিল বলা হলো আর কই

কার ভুলে তুই বিদায় নিলি প্রশ্ন তো রাখবই।

চিকীৎসকেরা হ’ন ভগবান এ-কথাটা মানি

সকল কিছুর উর্দ্ধে যে নন এটাও সবে জানি।

আজও নানান প্রশ্ন মোদের মনকে রেখেছে ঘিরে

এমন রোগ সারিয়ে সবাই অনায়াসে যায় ফিরে।

উচ্চজাত নার্সিংহোমে হয়েছিল কাটা চেড়া

সময়ের শুধু ছিল অপেক্ষা এবার বাড়ি ফেরা।

হঠাৎ কেন মুর্ছা গেলি জ্ঞান এলো না আর

বদল হলো নার্সিংহোম, রুদ্ধ আইসিইউ-য়ের দ্বার।

প্রতিদিনের প্রতীক্ষাতে মোরা গুনেছি প্রহর গুলো

এই বুঝিবা সুস্থ হবার খবর এসে গেলো।

হঠাৎ করে বন্ধ চোখের পাতা খুলে গেলো

তবু নির্জীবতায় অসার থাকে ব্রেনের শেলগুলো।

মা-রে ছাড়িনি আশা করেছি মোরা প্রার্থনা যে নিত্য

হে ভগবান ফেরাও ডলে ঘটিয়ে সকল অনিত্য।

ডল কে চল

কেমন করে ভুলবো তোকে

উপায়টা তুই বল

আসর মাঠের সাদা ফড়িং

তুই ভালোবাসার ডল।

পিটি প্যারেড কদমতল

ছিলনা কোথাও ভুল

আর্চ, ভল্ট, ফ্যান্সি ড্রিলে

ছিল নিষ্ঠা বিলকুল।

কত ভাবনা তোদের নিয়ে

নিত্য নতুন খেলা,

বিকাল হলেই মাঠ হাজিরা

এক রঙীন হট্টমেলা।

হয়তো ভুলে গেছিস তোরা

সে সব দিনের কথা

কু-ঝিক ঝিক রেলের গাড়ি

বাড়ি ফেরার মজা।

চুপটি করে থাকলে বসে

ভাসে তোদের মুখ

ছটপটিয়ে উঠি আমি

কাটিয়ে সকল দুখ।

জানি এসব কথার জবাব

ছন্দে আসতো ফিরে,

ডল যে আমার ছন্দকারি

থাকতো ছন্দ নীড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − 4 =