ডুমুর রাখবে সুস্থ!
নরম ও মিষ্টি জাতীয় ফল ডুমুর। ফলের আবরণ ভাগ খুবই পাতলা এবং অভ্যন্তর ভাগে অনেক ছোট ছোট বীজ থাকে। এ ফল শুকনো ও পাকা অবস্থায় খাওয়া যায়। জ্যাম হিসেবেও এটি ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও, স্ন্যাকস জাতীয় খাবারেও ডুমুরের প্রয়োগ হয়ে থাকে।
মোরাসিয়ে গোত্রভূক্ত ৮৫০টিরও অধিক কাঠ জাতীয় গাছের প্রজাতির মধ্যে একটি হলো ডুমুর। এ প্রজাতির গাছ, গুল্ম, লতা ইত্যাদিকে সম্মিলিতভাবে ডুমুর গাছ বা ডুমুর নামেও ডাকা হয়। ইংরেজি নাম Ficus, Fig tree।
জেনে নেওয়া যাক ডুমুরের গুণ:-
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে:
ডুমুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ডায়েটে পটাশিয়ামের পরিমাণ কমে গিয়ে সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি হলে হাইপারটেনশনের সমস্যা হতে পারে। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় জানা গেছে, যারা স্ন্যাকস ও মিষ্টির পরিবর্তে ফল, সবজি ও লো ফ্যাট ডেইরি খাবার খান তাদের ডায়েটে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে। এ সমস্যা সমাধানে উপকারে লাগে ডুমুর।
ওজন কমাতে সাহায্য করে:
খাদ্য আঁশ সমৃদ্ধ ডুমুর ওজন কমাতে সাহায্য করে। ওজন নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্য থাকলে খাদ্য তালিকায় ডুমুর রাখুন। ডুমুরে উপস্থিত পেকটিন রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
ডায়াবেটিসের সমস্যায় উপকারী:
ডুমুরের সঙ্গে সঙ্গে ডুমুরের পাতাও সমান উপকারী। ডুমুরের পাতার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-ডায়াবেটিক উপাদান। অনেক সময় ডায়াবেটিসের রোগীকে ইনসুলিনইনজেকশন নিতে হয়। গবেষণায় জানা গেছে, ডুমুর এ ইনসুলিন গ্রহণের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ডুমুরের পাতার রস সকালে খেতে পারেন। ইনসুলিনের ওপর নির্ভরশীল ডায়াবেটিক রোগীর জন্য ডুমুর খুবই উপকারী।
মেনোপজ পরবর্তী পর্যায়ের জন্য উপকারী:
গবেষণায় জানা গেছে, মেনোপজ পরবর্তী পর্যায়ে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে ডুমুর সাহায্য করে। খাদ্য আঁশ সমৃদ্ধ ডুমুর খাদ্য তালিকায় রাখার ফলে ৩৪শতাংশ নারীদের মধ্যে স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কম দেখা দিয়েছে।
হাড় বৃদ্ধিতে সহায়ক:
ডুমুরে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। নিয়মিত অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার খেলে প্রস্রাবের মধ্যে দিয়ে ক্যালসিয়াম বের হয়ে যায়। ক্যালসিয়ামের এলস প্রতিরোধ করতে ডুমুরের পটাশিয়াম সাহায্য করে। এ ভাবে ডুমুর হাড় শক্ত হতেও সাহায্য করে।
হৃদপিণ্ড ভালো রাখে:
ডুমুর ও ডুমুরের পাতা ট্রাইগ্লিসারাইড লেভেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ফলে হার্ট ভালো থাকে। এ ছাড়া ডুমুরে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে ম্যাংগানিজ। খাদ্যতালিকায় ডুমুর রাখার চেষ্টা করুন। কারণ বয়স জনিত কারণে নানা অসুস্থতা প্রতিরোধ করতে ডুমুর সাহায্য করে।
অন্যান্য উপকারিতা:
ডুমুরে জলের পরিমাণ বেশি থাকে। এ জন্য থেঁতো করা ডুমুর ত্বক পরিষ্কার করার জন্য, বিশেষ করে ব্রণ সারাতে সাহায্য করে। যাদের দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারে অ্যালার্জি রয়েছে তাদের জন্য ডুমুর উপকারী।
ডুমুরে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। পেটের সমস্যা দূর করতে ডুমুর খুব ভালো কাজ করে। দুর্বলতায় ভোগেন এরকম ব্যক্তির জন্য ডুমুর উপকারী। বিশেষ করে মুখ, জিভ বা ঠোঁট ফাটার সমস্যা ভীষণভাবে থাকলে তা নিরাময় করতে ডুমুর সাহায্য করে। এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলসের সমস্যায় ডুমুর উপকারী।