শীত এসেছে
শঙ্কর ঘোষ, কৃষ্ণনগর, নদিয়া
শীত এসেছে ধরণী পরে
হিমেল বাতাস বয়,
প্রকৃতি তার পাতা ঝরানোর
নীরব বেদনা সয়।
মাঠে মাঠে ব্যস্ত থাকে
চাষী ধান কাটায়,
মাঠ যেন তার সন্তানকে
অন্যের ঘরে পাঠায়।
ভোর বেলা ঘন কুয়াশায়
নদী তীর ঢাকে,
দূর নদীতে জেলেরা তখনও
মাছ ধরতে থাকে।
ভোর আকাশে আবির ছড়িয়ে
দিনমনি জাগে,
গঁায়ের বঁধুর নয়ন থেকে
ঘুম পরীরা ভাগে।
প্রকৃতির মাঝে একই খেলা
চিরকাল চলে,
কেহ খুশী কেহ দুঃখি হয়
কবিরা তা বলে।
গাদা চন্দ্র মল্লিকা ডালিয়া সূর্যমুখী
শীতে পাওয়া যায়,
কপি মুলো পালং সিম
লোকে পেট পুরে খায়।
সরষে ফুলে ভরে থাকে
মাঠের সারা গাটা,
দেখে যেন মনে হয়
হলুদ গালিচা পাতা।
খেজুরের রস নলেন গুড়
শীতে পাওয়া যায়,
পিঠে পুলি পায়েস খেয়ে
লোকে তৃপ্তি পায়।
নাচ গান যাত্রা পিকনিক
শীতে বেশি হয়,
মানুষও যায় ভীড় জমাতে
শীতকে করে জয়।
ভ্রমণ পিপাসু মানুষেরা
শীতে বেড়াতে ছোটে,
অনেকের আবার ইচ্ছা থেকেও
ভাগ্যে নাহি জোটে।
শীতে কষ্ট অনেকেরই হয়
গরীবরা তাতে পরে,
গরীব বৃদ্ধবৃদ্ধা শিশুরা
পোশাক বিনে মরে।
শীত কালে ঘুমিয়ে রাতে
ভীষণ আরাম হয়,
লেপ কঁাথা না থাকিলে
কষ্টের শেষ নাহি রয়।
শীত কালে অনেকেই ভোগে
সর্দিকাশি জ্বরে,
বিবাহ অনুষ্ঠানে কব্জি ডুবিয়ে
উদর পূর্তি করে।
শীত কালে একটাই কষ্ট
ফ্যান চলেনা ঘরে,
মশার কামড়ে মরে মানুষ
ম্যালেরিয়া জ্বরে।
এত রূপ বৈচিত্র্য রঙে ভরা
শীতের দেহ খানি,
তবু শুষ্ক দেহে হাত পা ফেটে
পায় কষ্ট শীত রাণী।