উত্তরণ
জয়শ্রী কুন্ডু পাল ##
মাধ্যমিকে ভালো রেজাল্ট করেছিলাম বলে
বাবা কিনে দিয়েছিল সাইকেল কষ্ট করেই,
ক্লাস ইলেভেনে এ জগত্তারিণী বিদ্যামন্দিরে ভর্তি হয়ে যাই,
স্কুলে যাই রোজ বাবার দেওয়া সাইকেলে চড়ে।
খেয়াল করিনি হায়না রোজ ওৎ পাতে।
একদিন সুযোগ বুঝে পথ আগলে দাঁড়ায় বলে,’তোকে আমি ভালোবাসি,
বল্ করবি আমাকে বিয়ে’?
তারপর টেনে নিয়ে যায় ভাঙা পাঁচিলের এক কোনে।
বহু জোরাজুরি আর চিৎকার করে
পালিয়ে আসি যেই
দিল অ্যাসিডের বোতল মুখের ওপর ছুঁড়ে
তারপর……….ঘটনা অনেক
হাসপাতাল, সেবা প্রতিষ্ঠান, নেতা মন্ত্রী,
অনেক দূর গড়াবার পর
ফিরে আসি বিকৃত মুখ নিয়ে।
আত্মীয়েরা সব দূরে সরে যেতে থাকে
বিকৃত মুখ আর গায়ে ছিটানে কাদা দেখে।
তবু পড়াশুনা শেষ করি
এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাত ধরে।
তারপর………..
গঙ্গায় বয়ে গিয়েছে অনেক জল,
বয়সও গড়িয়ে গেছে।
না। আর কারো সাহায্য নয়-
না নেতা, না মন্ত্রী
নয় কোন সেবা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয়,
নিজের দেশ ছেড়ে চলে আসি
সুদূর মুম্বাই-য়ে এই অফিস পাড়ায়
এখানে ই খুলেছি একটা ক্যাফে
আমার মতো আরো জনাকয়েক কে নিয়ে।
মুখ পুড়ে গেছে অ্যাসিডে
লড়াকু মনটা যে অনেক উঁচুতে
সেটা পোড়ে নি দুর্বৃত্তের ছোঁড়া অ্যাসিডে।