উপকারী জলপাই

জলপাই একটি সুপরিচিত ফল। বাজারে এই সময় প্রচুর জলপাই চোখেও পড়ছে। এই ফল কিন্তু আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। কাঁচা জলপাই বেশ পুষ্টিকর, প্রচুর ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। কাঁচা ফল টাটকা, রান্না করে ও আচার তৈরী করে খাওয়া হয়। জলপাই আচারের জন্য দুর্দান্ত। জলপাই  সাধারণত ডালের সঙ্গে এবং আচার বানিয়ে খায় সবাই। কিন্তু কাঁচা জলপাইয়ের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। প্রতিদিন জলপাই খাওয়ার অভ্যাস করলে আপনার স্বাস্থ্য ভালো থাকবে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে। জলপাইয়ের খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ। এই আঁশ নিয়মিত খাবার হজমে সাহায্য করে। পাশাপাশি পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত, বৃহদন্ত্র ও কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এই ফল। গবেষণায় দেখা গেছে, জলপাই এর  তেল আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।

লোহার ঘাটতি মেটায়ঃ

কালো জলপাই লৌহের বড় উৎস। রক্তের লোহিত কণিকা অক্সিজেন পরিবহন করে। কিন্তু শরীরে লৌহের অভাব হলে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়। ফলে শরীর হয়ে পড়ে দুর্বল। লৌহ শরীরের এনজাইম চাঙা রাখে।

হৃদ যন্ত্রের যত্নে জলপাই ঃ

 জলপাইয়ের তেল হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়। জলপাইয়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। ফলে কমে যায় হৃদরোগের ঝুঁকি।


ক্যানসার প্রতিরোধে জলপাইঃ

কালো জলপাই ভিটামিন-ই–এর বড় উৎস। যা ফ্রি র‍্যডিকেল ধ্বংস করে। ফলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। জলপাইয়ের ভিটামিন-ই কোষের অস্বাভাবিক গঠনে বাধা দেয়। ফলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে।

ওজন কমাতে জলপাই ফলঃ

যখন জলপাইয়ের মোনো-স্যাচুরেটেড ফ্যাট অন্য খাবারে বিদ্যমান স্যাচুরেটেড ফ্যাটের বদলে গ্রহণ করা হয় তখন তা দেহের ভেতরের ফ্যাট সেলকে ভাঙতে সাহায্য করে। জলপাইয়ের তেলেও রয়েছে লো কোলেস্টেরল যা ওজন এবং ব্লাডপ্রেশার কমাতে সহায়ক।

 
পরিপাকক্রিয়ায় সাহায্য করেঃ

নিয়মিত জলপাই খেলে গ্যাস্ট্রিক ও আলসার কম হয়। বিপাকক্রিয়া ঠিকভাবে হয়।

 
চোখের যত্নেঃ

জলপাইয়ে ভিটামিন-এ পাওয়া যায়। ভিটামিন-এ চোখের জন্য ভালো। যাদের চোখ আলো ও অন্ধকারে সংবেদনশীল তাদের জন্য ওষুধের কাজ করে জলপাই। এ ছাড়া জীবাণুর আক্রমণ, চোখ ওঠা, চোখের পাতায় ইনফেকশনজনিত সমস্যা দূর করে এটি।

 
পিত্তথলিতে পাথর জমতে বাধা দেয়ঃ

নিয়মিত জলপাই খেলে পিত্তথলির পিত্তরস ঠিকভাবে কাজ করে। পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা কমে যায়।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেঃ

জল পাইয়ে যে খাদ্যআঁশ আছে তা মানুষের দেহের পরিপাক ক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এবং হজমে সহায়তা করে

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ

জলপাই রক্তের চিনি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণে থাকে।

অ্যালার্জি প্রতিরোধে জলপাইঃ

গবেষণায় দেখা গেছে, জলপাই অ্যালার্জি প্রতিরোধে সহায়তা করে। জলপাইয়ে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা ত্বকের ইনফেকশন ও অন্যান্য ক্ষত সারাতে কার্যকরী ভুমিকা রাখে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ

জলপাই প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। সর্দি, জ্বর ইত্যাদি দূরে থাকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

হাড়ের ক্ষয়রোধ করে জলপাইঃ

জলপাইয়ের মনো স্যাচুরেটেড চর্বিতে থাকে প্রদাহবিরোধী উপাদান। বয়সের কারণে অনেকেরই হাড়ের ক্ষয় হয়। হাড়ের ক্ষয়রোধ করে জলপাই তেল।

ত্বক ও চুলের যত্নেঃ

কালো জলপাইয়ের তেলে রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ত্বক ও চুলের যত্নে কাজ করে। জলপাইয়ের তেল চুলের গোড়ায় লাগালে চুলের গোড়া মজবুত হয়। এতে চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা দূর হয়। 

জলপাইয়ের ভিটামিন-ই ত্বকে মসৃণ ভাব আনে। এ ছাড়া ত্বকের ক্যানসারের হাত থেকেও বাঁচায় জলপাই। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির কারণে ত্বকের যে ক্ষতি হয় তা–ও রোধ করে জলপাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven − 1 =