একটি রাতের গল্প

বিশ্বজিৎ রায়, বালুরঘাট, দক্ষিন দিনাজপুর ##

                       ( ১ )

শশীকান্ত কাকাবাবু  বাড়ির দ্বিতীয় চাবির গোছাটি আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে অনুনয়ের সুরে বললেন- 
“বাবা  বিশ্বজিৎ, চিকিৎসার জন্য কিছুদিন ছেলের কাছে কলকাতায় গিয়ে থাকতে হবে।  তবে বেশি দিন নয়, সাত আট দিন ধরে রাখো। টানটা ভীষণ বেড়েছে,  একটুতেই হাফিয়ে উঠি, ডাক্তার দেখানো অতি প্রয়োজন। তুমিতো জানো বাড়িতে আমি একা একটি মাত্র প্রাণী,   আর সঙ্গী বলতে ঐ অবলা অন্ধ  অক্ষম কুকুরটি। বাড়ি ফাঁকা রেখে যাই কিভাবে  ? তবে তুমি চিন্তা কোরো না,   দুবেলা কাজের মাসি এসে কুকুরটির দেখাশোনা করে যাবে, তুমি শুধু রাত্রিটা আমার বাড়িতে থাকবে।  আজই সন্ধ্যায় ট্রেনে রওনা হবো বাবা, তোমাকে আজ থেকেই থাকতে হবে। “

শশীকান্ত চ্যাটুর্জে সত্তরোর্ধ অবসরপ্রাপ্ত আবগারি দপ্তরের কর্মী-  আমার প্রতিবেশী।  ছিপছিপে চেহারার সর্বক্ষণ টিপটাপ থাকতেই ভালবাসেন।  লোকটির কিছু ইতিহাস রয়েছে।  পৈত্রিক সম্পত্তি, আর নিজে সারা জীবনে অসৎ উপায়ে ( লোকে বলে)   যা উপার্জন করেছেন তাতে অনেকের কাছেই তিনি ঈর্ষার পাত্র ।   জীবনযাপনে  দেবরাজ ইন্দ্রও ওনার কাছে নস্যি।  আবার দেদার হাতে বিলিয়েও দেন। তাই যতই তাঁর অখ্যাতি থাকুক না কেন, সবই আলোচিত হয় তাঁর অসাক্ষাতে। প্রাপ্তির লোভে আমরাও শ্রদ্ধা করি,  মানে ওনার পিছনে দাঁড়িয়ে সিগারেটের টান দিই। শশীকান্তবাবুর স্ত্রী ছিলেন পরমা সুন্দরী। কোনো এক  পারিবারিক কারণে ( শশীকান্ত কাকাবাবুর চরিত্র দোষের জন্যই না কী ?) তাঁর স্ত্রী আত্মহত্যা করেন।  কিন্তু শশীকান্তবাবু কোনো দিনই স্ত্রীর অভাব বোধ করেন নি। নানা জনের কাছ থেকে নানা কথা শুনে আর নিজে দেখে আমার  যা উপলব্ধি হয়েছে তা হলো ওনার ডান হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুলের নীচ থেকে হৃদয়রেখার উপরি পর্যন্ত – এই মাঝখানের নারীযোগ রেখাটি বিধাতা বড়ই যত্নসহকারে  এঁকে দিয়েছেন।   নারীযোগ বড়ই প্রবল। ছেলেকে পাঁচজনে পাঁচরকম কথা বলে – এই কারণে তিনি ছেলেকে নিজের থেকে দূরে  সরিয়ে কলকাতায় বোর্ডিং স্কুলে পড়িয়েছেন।  বর্তমানে ওনার ছেলে পড়াশোনা সম্পন্ন করে কলকাতায় একটি Multinational Company -তে চাকরি করছেন।

                          ( ২ )
                          
শশীকান্ত  কাকাবাবুর স্ত্রী আত্মহত্যা করবার পর থেকে সেই বাড়িতে তাঁর স্ত্রীর অতৃপ্ত আত্মার উপস্থিত সম্বোধীয় নানা ভৌতিক ঘটনা লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে।  এরকম দু চারটে ঘটনা প্রত্যক্ষদর্শীর মুখ থেকে আমিও শুনেছি।  অতএব কাকাবাবুর অনুরোধে আমার গলা গেল শুকিয়ে।  এদিকে ‘না’ও বলতে পারছি না। পঁচিশ বছরের তরতাজা যুবক, ভয়ে থাকবো না-  বলি কোন মুখে  ! অগত্যা ঢোক গিলে বললাম- ” ঠিক আছে কাকাবাবু, আপনি চিন্তা করবেন না, নিঃচিন্তে ডাক্তার দেখিয়ে আসুন,  আমি আপনার বাড়ি পাহারা দেবো”।

খাওয়াদাওয়া সেরে রাত্রি এগারোটা নাগাদ কাকাবাবুর বাড়িতে গিয়ে উঠলাম।  মাঘ মাসের পূর্ণিমা তিথি।  ব্যালকনিতে গিয়ে দাঁড়ালাম।  প্রকৃতির এমন শান্ত,  নীরব রুপ আমি ইতিপূর্বে কখনও উপলব্ধি করি নাই।  অসংখ্য নক্ষত্র দ্বারা পরিবেষ্টিত টকটকে সোনালী বর্ণের বৃহদাকার চাঁদটির মৃদু   ছায়া পৃথিবীর বুকে পড়ে যেন এমন এক মায়াবী জগতের  সৃষ্টি  করেছে- যে জগতে  কোনো ব্যস্ততা নেই,  কোনো কোলাহল নেই, যা আছে তা হলো অপার নীরবতা ।   সারাদিনের ক্লান্ত শিশু যেমন দিনের শেষে মাতৃক্রোড়ে মাথা রাখবার পর  মা  তাঁর মস্তিষ্কে স্বস্নেহে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে ঘুম পাড়িয়ে দেন, ঠিক তেমনি সারাদিনের কর্মব্যস্ত শ্রান্ত ধরণীকেও যেন চাঁদ তাঁর স্নিগ্ধ  জ্যোৎস্নার আলতো ছোঁয়ায় ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছে।  এ মনোরোম দৃশ্যকে  শব্দের দ্বারা সঠিকভাবে ব্যক্ত করা আমার মত আনরোমান্টিক ব্যক্তির পক্ষে বড়ই দুরূহ কাজ, এ দৃশ্য উপভোগের জন্য একান্তই অন্তর্দৃষ্টির প্রয়োজন,  প্রয়োজন উপলব্ধির।   আমি কবি নই।  মাঝে মাঝে যখন মনের মধ্যেকার কবিস্বত্বার জ্বর মাথা চাড়া দিয়ে ম্যালেরিয়া রোগীর মত আমাকে বিকারগ্রস্থ করে তোলে তখনই কিছু লিখবার চেষ্টা করি মাত্র।  কিন্তু অবশেষে সে যে কোনো বস্তুতে পরিণত হয়- আমি আজও তা বুঝে উঠতে পারিনি।  প্রকৃতির প্রতিটি বস্তুর মধ্যে এ অনন্ত সৌন্দর্য্য নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিরাজমান।আমরা দুই চক্ষু দিয়ে প্রকৃতিকে দেখি বটে,   কিন্তু তার পূর্ণ রসাস্বাদন করবার জন্য যে  উপলব্ধির  দরকার, যে অন্তর্দৃষ্টির দরকার সেইটিই নেই আমাদের,   আর  নেই বলেই আমরা প্রকৃতির এই শাশ্বত পূর্ণ রুপ,রস গন্ধরুপ উন্মোচনে বারেবারে ব্যার্থ হই।  দর্শন ও যথার্থ উপলব্ধির সহাবস্থানের দ্বারাই একমাত্র সেই স্বর্গীয় সৌন্দর্যের নাগাল পাওয়া যায়।  

আচম্বিতে কোথা থেকে তিন চারটে কালো মেঘের টুকরো এসে ক্ষণে ক্ষণে চাঁদকে ঢেকে দিয়ে আমার এই মনোরোম দৃশ্য উপভোগে বড়ই  ব্যাঘাত ঘটাতে লাগলো এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই হু হু করে উত্তরে শীতল বাতাস বইতে শুরু করলো।  নিমিষে কালো মেঘে সমস্ত আকাশ ছেয়ে গিয়ে বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা দিল। আমি ব্যালকনি ছেড়ে ঘরে গিয়ে বিছানায় উঠে বসলাম।  

হঠাৎ করে কুকুরটির কথা মনে পড়লো। আমার শোবার ঘরের পাশের ঘরটিতে কুকুরটিকে  রাখা হয়েছে।  বেচারা একেতে চোখে দেখতে পায় না, তারপর চলাফেরা করবার ক্ষমতাও প্রায় হারিয়েছে।  শীতের রাত, গায়ে কিছু ঢাকা না দিয়ে দিলে সারা রাত কষ্ট পাবে। এই ভেবে বিছানা থেকে নেমে কুকুরটির ঘরে গিয়ে যেই ঢুকেছি অমনি লোডশেডিং ।  কোনোমতে হাতড়ে  একটি টেবিলে কিছু মোমবাতি খুঁজে পেলাম, তার থেকে একটি মোমবাতি জ্বালিয়ে নিলাম।  ঘরটির আয়তন অনুযায়ী আসবাবপত্রের আয়োজন অতি সামান্য।  একটি বড় ফাঁকা কাঠের আলমারি।  একটি টেবিল ( যে টেবিলে মোমবাতি খুঁজে পেয়েছিলাম),  টেবিলের উপরে কাকাবাবুর মৃত স্ত্রীর ল্যামিনেশন করা মস্ত এক ছবি।  ছবিতে মালা পড়ানো রয়েছে, সমস্ত ঘর ধূপকাঠির গন্ধে পরিপূর্ণ। ছবির সামনে একটি থালায় একজন পরিণত মানুষ যে পরিমাণ আহার করেন সেই পরিমাণ আহার ও একটি গ্লাসে জল,   কিছু পোড়া  ধূপকাঠি, কিছু মোমবাতি ও ফুল  রয়েছে।  আলো আধারিতে   ছবিটি দেখেই আমার কেমন যেন ভয় ভয় করতে লাগলো। ঘরের যে প্রান্ত থেকেই ছবিটির দিকে তাকায় না কেন  যেন মনে হচ্ছে ছবিটি আমায়  অনুসরণ করছে, যেন মনে হচ্ছে অসংখ্য অব্যাক্ত অভিযোগের সুরাহা চেয়ে নিথর করুণ চোখ একদৃষ্টিতে আমার  দিকে তাকিয়ে আছে।  ভয়েই বলুন আর ভক্তিতেই বলুন আমি দুই হাত কপালে ঠেকিয়ে ছবিটির উদ্দেশ্যে এক প্রণাম দিলাম ঠুকে।  কুকুরটি আলমারির পায়ার সাথে বাঁধা ছিল এবং,   আলমারির একদম গা ঘেঁষে কুকুরটি শুয়ে রয়েছে।  পাশেই একটি কম্বল রাখা ছিল।  সেই  কম্বলটি নিয়ে কুকুরটিকে আপাদমস্তক ভালো করে ঢেকে দিয়ে ঘর থেকে আমি বেরিয়ে এলাম।


                           ( ৩ )


কাকাবাবুর শোবার ঘরের আলমারিতে বেশ কিছু বই রাখা ছিল।  তার মধ্যে থেকে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের একটি গল্পগুচ্ছের বই নিয়ে আমি বিছানায় উঠে বসলাম।  ইতিমধ্যে লাইনও এলো।  ” বৈকুণ্ঠের উইল ” পড়তে পড়তে কখন যে ঘুমিয়ে পরেছি খেয়াল  নেই।  হঠাৎ ছাদের উপরে একজন মানুষ হেঁটে গেলে যেমন ‘ধুপ ধুপ ‘ শব্দ হয় সেরকম শব্দে আমার  ঘুম  কেটে গেল।  যেন মনে হচ্ছে,  কেও ছাদে জোরে জোরে পায়চারি করছে, আবার কখনও মনে হচ্ছে যেন পাশের ঘরগুলি থেকে পায়চারি করবার শব্দটি আসছে। নিস্তব্ধ রাতে অতি সামান্য শব্দই জোরে শোনায়, এ তো হাটবারমত  শব্দ-  ধরফড় করে বিছানায় উঠে বসলাম।  ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি রাত্রি দুটো বাজে।  শব্দটি মাঝে মাঝে আসছে,   আবার থেমে যাচ্ছে, আবার আসছে,  আবার থেমে যাচ্ছে।  প্রথমে ভাবলাম হয়তো আমারই মনের ভুল – নানা জনের কাছ থেকে বাড়িটির সম্বন্ধে নানা ভৌতিক গল্প শুনেছি, বাইরে বাতাসও বইছে,   তাই হয়তো আমার  এরকমটা বোধ হচ্ছে।  কিন্তু না, মাঝে মাঝে শব্দ তো আসছে   ! তাহলে কাকাবাবুর বাড়ি কী সত্যই ভুতুরে বাড়ি ? লোকে বাড়িটিতে অশরীরী আত্মার উপস্থিত সম্বন্ধে যা বলে তা কী ঠিক  ? মহা বিপদে পড়লাম। এত রাতে বাড়িতেও যাওয়া ঠিক হবে না।  গিয়ে কি বলবো,   ভয় পেয়ে চলে এলাম  ! কিছুক্ষণ স্থির হয়ে বিছানায় বসে থাকলাম।  তারপর বিছানা থেকে নেমে  মনে কিছুটা সাহস নিয়ে কুকুরটির ঘর বাদ রেখে ( কাকাবাবুর মৃত স্ত্রীর ছবির কথা চিন্তা করে)  লাইট জ্বালিয়ে বাড়ির সমস্ত ঘর ধীরে ধীরে ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম – শব্দটি আসছে কোথা থেকে  ? না,   কোথাও কোনো শব্দের উৎস তো নেই !  তাহলে কী চোর এসেছিল ? কিন্তু চোর যদি এসেই  থাকে তাহলে কুকুরটির দৃষ্টিশক্তি না থাকলেও ঘ্রাণশক্তি তো রয়েছে! চেচিয়ে তো উঠবে!  কিন্তু কুকুরটিও নির্বিকার ! তাহলে হয়তো আমিই  ভুল শুনেছি – এই মনে করে বাড়ির সমস্ত লাইট নিভিয়ে দিয়ে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম।

সবে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়েছি ওমনি আবার সেই পায়চারির শব্দ।  সঙ্গে আবার নতুন সংযোজন।  আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি কেও যেন আমার পাশে শুয়ে ফোঁস ফোঁস করে জোরে জোরে প্রশ্বাস ফেলছে।  তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় আমি দুই হাত দিয়ে বারেবারে অদৃশ্য অথচ অনুভূত ব্যক্তিটিকে বিছানা থেকে ঠেলে ফেলে দেবার চেষ্টা করতে লাগলাম, কিন্তু কিছুতেই পারছি না।  আমার হাত যেন একই জায়গায় স্থির হয়ে রয়েছে, শত চেষ্টা করেও কিছুতেই আমার হাত তাঁর কাছে পৌচাচ্ছে না। ‘ বাঁচাও’, ‘বাঁচাও ‘ করে চিৎকার করবার চেষ্টা করছি, কিন্তু মুখে  শুধু গোঙানির  শব্দ।  আমি কী জেগে আছি  ? না স্বপ্ন দেখছি  ?  সত্যই কী কেও আমার পাশে শুয়ে রয়েছে,    সত্যই কী কেও বাড়িময় পায়চারি করছে ?  না কী স্বপ্ন দেখছি ? শুধু মনে হচ্ছে, এই ঘোর  কাটাতে পারলেই আমি বেঁচে যাবো। জলের মধ্যে হাত পা বেঁধে দিয়ে কোনো ব্যক্তিকে ফেলে দিলে সে যেমন হাত পা খুলে বাঁচবার  আপ্রাণ চেষ্টা করে, আমিও তেমনি প্রকৃতস্থ হবার  অাপ্রাণ চেষ্টা করতে লাগলাম, এবং বেশ কিছুক্ষণ ধরে নিজের সাথে নিজে যুদ্ধ করবার  পর  ঝট করে আমার তন্দ্রাচ্ছন্ন কেটে গেল।  মাঘ মাসের কনকনে শীতের  রাত্রি, যেখানে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে, অথচ আমার সারা শরীর দিয়ে দরদর করে ঘাম ঝরতে লাগলো।  এবার সত্যই ভয় পেয়ে গেলাম।  শরীরের প্রত্যেকটি রোম খাড়া হয়ে উঠলো, সারা শরীর থরথর করে কাঁপতে লাগলো।  বিছানা থেকে যে নামবো সেই সাহসটুকুও হারিয়ে ফেললাম।  অবশেষে প্রকৃতস্থ হবার পর বিছানা থেকে নেমে এক গ্লাস ঠান্ডা জল খেলাম এবং পাখাটি চালিয়ে দিলাম।  মনে মনে স্থির করলাম বাকি রাত আর ঘুমবো না, জেগেই কাটিয়ে দেব। কিন্তু রাত্রির বাকি অবশিষ্ট সময়ের এক একটা  মিনিট যেন এক একটা যুগের সমতুল্য মনে হতে লাগলো।   ভোর পাঁচটার দিকে যারা প্রাতভ্রমণে বেরিয়েছিলো রাস্তায় তাদের কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়ে আমি হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।  মনে মনে ভাবলাম আর যাই হোক, কোনো বিপদ হলে অন্তত লোকের সাহায্য তো পাবো।

সকালে বাড়িতে যাবার আগে কুকুরটি কি অবস্থায় রয়েছে দেখবার জন্য আমি কুকুরটির ঘরে গিয়ে ঢুকলাম।  ঢুকেই আমি স্তম্ভিত। গত রাত্রের সমস্ত রহস্য আমার কাছে পরিস্কার হয়ে উঠলো।  ঘটনাটি এ রকম ঘটেছিল- রাতে কুকুরটিকে আমি কম্বল দিয়ে আপাদমস্তক ঢেকে দিয়েছিলাম। ওতে কুকুরটির নিশ্বাস প্রশ্বাসের  অসুবিধা হচ্ছিল।  মুখ থেকে কম্বলটি সরাবার চেষ্টা  যতবারই করেছে ততবারই কুকুরটির মাথা গিয়ে লেগেছে ফাঁকা আলমারিতে,   আর মানুষ হেঁটে যাবার মত ‘ধুপ ‘,’ধুপ ‘ শব্দের সৃষ্টি হয়েছে।  কম্বলের ভিতর মুখ থাকায় প্রশ্বাসের শব্দও নিস্তব্ধ রাতে জোরে শুনিয়েছে।  বাকি সবই স্বপ্নের ঘোরে মনের ভুল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eight − two =