তুমি সাজো
অমিত কুমার বর, খেজুরী, পূর্ব মেদিনীপুর ##
প্রকৃতি তুমি সাজো, তুমি সাজো
তুমি যেমন খুশি সাজো ।
আপনার রূপে আপনি মুগ্ধ হও,
তুমি নিবিড় হও,আরো নিবিড় ।
তুমি স্নেহ দাও, তুমি পালন করো
আদিম যারা তাদের!
তোমার বুকে, যারা শ্রেষ্ঠত্বের
অহংকার করে,তাদের শেখাও
যন্ত্রণা কাকে বলে, ডরাও তাদের ।
তুমিই পারবে, হ্যাঁ তুমিই পারবে,
ধনীর অহংকার ধুলোয় মিশিয়ে দিতে ।
তোমার বুকে জন্ম নিয়েছে
ক্ষুদ্র ‘করোনা’,যে আজ সমগ্র
জাতিকে শিক্ষা দিচ্ছে ।
আজ সবাইকে গৃহবন্দী করেছে!
তোমাকে সময় দিয়েছে,
তুমি সাজবে বলে!
ধরনী! সাজো, তুমি সাজো
সময় নষ্ট কোরো না!
তোমার মানব সন্তানাদি
তোমার কথা ভাবে না!
বিষিয়েছে বায়ু যুগ যুগ ধরে,
দূষিত করেছে জল ।
কালের গর্ভে বিলুপ্ত প্রান
ফেলে চোখের জল ।
মানুষ কিন্তু ভাবে না! তাদের কথা,
বোঝে না তাদের ব্যথা!
বোঝে শুধু আপন, একান্তই আপন
মানে নিজের স্বার্থের কথা ভাবে ।
এমনকি তুমিই যে তাদের ‘মা’
সে খেলায় কেউ রাখে না ।
সেদিন তোমার শ্বাস চেপে ধরে,
‘ফুসফুসে’ দেয় আগুন!
অগ্নিদগ্ধ অস্ট্রেলিয়ায়
আসবে কি আর ফাগুন?!
নাহ্ এরা তোমায় ভালোবাসে না,
শুধু অভিনয় করে, শুধু ছলনা করে
আর মুখোশ পরে থাকে!
তাই প্রকাশ্যে যে আজ মুখোশ পরতে হয়,
না হলে মৃত্যু সুনিশ্চয় ।
তোমার হাতেই সভ্যতা আজ শান্ত
থেমেছে দম্ভের হুংকার,
রনতরী আজ সাজে না,
যুদ্ধ বিমানও ওড়েনা,
বারুদের বুকে, পরমাণু শ্বাস নেয় না ।
আজ মুক্ত বায়ুর স্রোতে
ভেসে যায় যত সুবাস ।
আজ গাছ-গাছালির বুকে
সবুজের মিঠে ভাস ।
মানব জাতির চিন্তাধারায়
টেনেছ তুমি রাশ,
সাবাস্! বসুধা সাবাস্ ।
তুমি সুস্থ হও, নিজেই নিজেকে গড়ো
ভার বইতে বইতে তুমি ক্লান্ত,
তুমি জিরিয়ে নাও,
মানুষকে ঘরে বেঁধে ।
তুমি ভয় দিয়ে যাও, যে ভয়কে দেখে
ভয়ও শিউরে ওঠে।
নইলে তোমার করুন দশা হবে
এই নিকৃষ্ট জীবের হাতে ।
আবার হয় তো হিংস্র হবে,
কোন সেমিসাইল ।
যুদ্ধ ট্যাঙ্ক,পরমাণু বোমা
ছুটবে হাজার মাইল ।
আবার হয়তো বিশ্বায়নের আঁচে
পুড়বে কত দেশ, আকাল নামবে
গরীবরা কাঙাল হবে,
ক্ষিদের জ্বালায় মরবে!
ধনীর গর্ব আকাশ ছোঁবে!
জল-স্হল-আকাশ জুড়ে
যন্ত্রদানব ঘুরবে ।
আর তোমার! আদিম অন্তরঙ্গ
সন্তানেরা মরবে!!
হ্যাঁ হ্যাঁ মরবে, বিলুপ্ত হবে!!
আর তোমার বুকটা,
দাউ দাউ করে জ্বলবে!
তার চেয়ে ভালো, এই বেশ
তুমি সাজো, তুমি সাজো
আপন খেয়ালে সাজো!!