নগ্ন হলেই মিলবে ঋণ!
নগ্ন হলেই মিলবে ঋণ। নগ্ন ছবির বিনিময়ে তরুণীদের দ্রুত ঋণ দিচ্ছে একাধিক ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা। ‘নেকেড লোন সার্ভিস’ নামে এই অদ্ভুত ঋণ সেবা চালু করেছে চীনের বেশ কিছু ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা।
সংবাদমাধ্যম ভাইস ডট কম এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই সংস্থাগুলো থেকে ঋণ নিতে হলে দুটি শর্ত পূরণ করতে হবে। ঋণগ্রহীতাকে অবশ্যই তরুণী হতে হবে এবং তাকে ঋণের প্রতিশ্রুতি হিসেবে অবশ্যই নিজের নগ্ন সেলফি পাঠাতে হবে। অবাক কাণ্ড এই শর্তগুলিতে সহজেই রাজি হচ্ছেন দলে দলে তরুণী।
খবরে প্রকাশ, চিনে তরুণ প্রজন্মের কাছে নগদ টাকার চাহিদা সাংঘাতিক। ভোগ্যপণ্যের প্রতি তরুণ প্রজন্মের ক্রমবর্ধমান চাহিদাই যে এই কাণ্ডের পেছনে, তা জানাচ্ছেন দেশটির অর্থনীতিবিদরা। আর সেই কারণেই এমন বিচিত্র শর্তে রাজি হচ্ছেন ঝাঁকে ঝাঁকে তরুণী। ‘নেকেড লোন সার্ভিস’-এর মূল কারনটি হল এই— ঝণগ্রহিতা যদি ঋণ পরিশোধে ঝঞ্ঝাট পাকান, তা হলে তাঁর নগ্ন সেলফি প্রকাশ করে দেবে সংস্থা।
২০১৬ সালে ১৬১ জন তরুণীর এমন নগ্ন ছবি অনলাইনে প্রকাশ করে দেয় মাইক্রো লোন সংস্থাগুলি। এই সব তরুণীদের বয়স ১৯ থেকে ২৩ বছরের মধ্যে। এদের নেওয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ১,০০০ থেকে ২,০০০ মার্কিন ডলারের মধ্যে। ‘চায়না ইউথ ডেলি’-র খবর অনুযায়ী, ২০১৭-এ ‘নেকেড লোন সার্ভিস’-এর ব্যবসা ছিল রমরমা।
বলাই বাহুল্য এই ধরনের ঋণ ব্যবসা বেআইনি। ‘নেকেড লোন সার্ভিস’-এর বাড়বাড়ন্ত চিন্তায় ফেলেছে গণপ্রজাতন্ত্রী চিনের সরকারকে। ভোগ্যপণ্যের প্রতি তরুণ প্রজন্মের ক্রমবর্ধমান চাহিদাই যে এই কাণ্ডের পিছনে, তা জানাচ্ছেন চিনা অর্থনীতিবিদরা। আপাতত এই ধরনের সংস্থার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার চেষ্টায় রয়েছে চিন সরকার।
চিনের ওই কোম্পানির নাম জিয়েদাইবাও। এটা আদতে ক্রেতা ও বিক্রেতার একটি মঞ্চ। অনলাইনে ঋণের জন্য এখানে আবেদন জানাতে হয়। ঋণ নিতে একজন গ্যারান্টার বা জামিনদার লাগবে। কিন্তু সেটা না থাকলেও সমস্যা নেই। তরুণীরা নিজের নগ্ন ছবি তুলে পাঠালেই সঙ্গে সঙ্গে ঋণ বরাদ্দ করা হয়।
ঋণগ্রহণকারীকে তার আত্মীয়-স্বজনদের ঠিকানা, ফোন নম্বর দিতে হয়। ঋণদানকারী বলে দেয়, যদি ঋণ শোধ করতে না পারেন তাহলে ওই ছবি পাঠিয়ে দেওয়া হবে পরিজনদের কাছে।
শর্ত সত্ত্বেও সে দেশে হাজার হাজার নারী নিজের নগ্ন ছবি জমা দিয়ে ঋণ নিচ্ছেন। তবে এ ব্যবসা চলছে অনলাইনের মাধ্যমে।
সম্প্রতি এ রকম নগ্ন ছবি ফাঁস হতেই হইচই পড়ে গেছে। ১০ জিবির নগ্ন ছবির একটি ফাইল ইন্টারনেটে ফাঁস হয়ে গেছে। তাতে বহু তরুণীর ছবি রয়েছে, যারা পরিচয়পত্র হাতে নগ্ন সেলফি তুলে পাঠিয়েছেন। তাদের অধিকাংশের বয়স ১৯ থেকে ২৩ বছরের মধ্যে। অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া।
‘নেকেড লোন সার্ভিস’ এ গ্রাহকের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তায় পড়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন সরকারও। আপাতত এই ধরনের সংস্থার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার চেষ্টায় রয়েছে তারা।