নতুন ডিজিটাল মুদ্রা আনছে চিন, লক্ষ্যঃ বিশ্ব শাসন


 ক্রিপটোকারেন্সির জগতে নতুন শক্তির আবির্ভাব। রাষ্ট্রীয়ভাবে তৈরি এমন এক ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে চিন, যার নাম ডিসিইপি। চিনের আশা একদিন পৃথিবীর সবাই ব্যবহার করবে এই ডিসিইপি। ক্রিপটোকারেন্সি হচ্ছে এমন এক ধরনের ডিজিটাল মুদ্রা; যা কোনো দেশের সরকার বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থেকে তৈরি করা যায়, ব্যবহারও করা যায়।

বিটকয়েন নামের ডিজিটাল মুদ্রার কথা অনেকেই জানেন। এর সূচনা হয়েছিল ২০১৪ সালে পশ্চিম চিনের এক গোপন স্থান থেকে, তৈরি করেছিলেন শ্যান্ডলার গুও নামে চিনের এক উদ্যোক্তা। তার মনে হয়েছিল, বিটকয়েন একদিন পৃথিবীকে বদলে দেবে, ডলারকে সরিয়ে পরিণত হবে পৃথিবীর প্রধান মুদ্রায়।

বিটকয়েন তৈরির জন্য লাগে বহু কম্পিউটার, এতে বিদ্যুৎ খরচ হয় প্রচুর। শ্যান্ডলার গুও এজন্য ব্যবহার করেছিলেন জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র, আর এতে তার অংশীদার ছিলেন চিনা সরকারের এক স্থানীয় কর্মকর্তা।

মেশিনগুলোর ক্ষমতা ছিল পৃথিবীর সব বিটকয়েনের ৩০ শতাংশ উৎপাদন করার – যাকে বলে মাইনিং। তবে বিটকয়েন প্রস্তুতকারক শ্যান্ডলার গুও এখন নতুন এক শক্তির উত্থান দেখতে পাচ্ছেন।

সেটা হচ্ছে চিন দেশের তৈরি একটি ডিজিটাল মূল্য পরিশোধের ব্যবস্থা। এর নাম ডিজিটাল কারেন্সি ইলেকট্রনিক পেমেন্ট বা ডিসিইপি। বলা যায়, এটা হচ্ছে চিনের মুদ্রা ইউয়ানের একটি ডিজিটাল সংস্করণ।

গুওর বিশ্বাস, এই ডিসিইপি একদিন পৃথিবীর সর্বপ্রধান মুদ্রা হয়ে উঠবে। একদিন পৃথিবীর সবাই ডিসিইপি ব্যবহার করবে।

গুওর যুক্তি, চিনের বহু মানুষ এখন থাকেন চিনের বাইরে। এক পরিসংখ্যানে বলা হয় তিন কোটি ৯০ লক্ষ চিনা এখন বিদেশে বাস করেন। এই লোকদের যদি চিনের সাথে যোগাযোগ থাকে, তাহলে তারা এই ডিসিইপি ব্যবহার করবে এবং তা এই কারেন্সিকে এক আন্তর্জাতিক কারেন্সিতে পরিণত করবে।

অনেকেরই আশঙ্কা, এটা আসলে কতটা সফল হবে এবং আরো একটা উদ্বেগ দেখা দিয়েছে যে, চিন হয়তো দেশের নাগরিকদের ওপর নজরদারি করতে ব্যবহার করতে পারে।

বিটকয়েনের মতোই একটা প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিসিইপি; যাকে বলে ব্লকচেইন। এটা হচ্ছে এক ধরনের ডিজিটাল হিসাবের খাতা। যা লেনদেন যাচাইয়ের জন্য ব্যবহার করা হয়। ব্লকচেইনে সেই নেটওয়ার্কে করা সব লেনদেনের রেকর্ড রাখা থাকে। আর নতুন লেনদেন যাচাই করার কাজে ব্যবহারকারীরাও ভূমিকা রাখেন।ব্যবহারকারীরা যদি একে অপরকে তাদের ফোনের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করতে চান- তাহলে তাদের ব্যাংকের কাছে যাওয়ার দরকার হচ্ছে না।

চিন পরিকল্পনা করছে, এ বছরের শেষের দিকেই তারা ডিসিইপি চালু করবে। কিন্তু চিনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখনো এর কোনো নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করেনি। এ বছরের প্রথম দিকে চিনের বাছাই করা কিছু শহরে ডিজিটাল কারেন্সি ট্রায়াল শুরু হয়।পুরোপুরি চালু হলে ব্যবহারকারীরা তাদের ব্যাংক কার্ড-এর সাথে একটা ডাউনলোড করা ইলেকট্রনিক ওয়ালেট সংযুক্ত করতে পারবেন, যা দিয়ে অর্থ লেনদেন এবং স্থানান্তর করা যাবে।

চিনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন চাপের মধ্যে আছে যেন এই ডিজিটাল কারেন্সি চালুর প্রক্রিয়া দ্রুত হয়। কারণ তারা চায় না ফেসবুকের লিব্রা বিশ্বের প্রধান ডিজিটাল কারেন্সি হয়ে উঠুক।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, চিন চেষ্টা করছে ইউয়ানকে আর্ন্তজাতিক মুদ্রায় পরিণত করতে – যাতে তা ডলারের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে। বর্তমান বৈশ্বিক অর্থব্যবস্থা এবং তা চালানোর যন্ত্রগুলো গড়ে তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র। চিন  মনে করছে, অন্য কিছু দেশ যদি চিনা মুদ্রা ব্যবহার করে তাহলে তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রভূত্ব ভাঙতে পারবে। বিটফুল ছদ্মনামধারী একজন চিনা ক্রিপটোকারেন্সি পর্যবেক্ষক এ মত দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, ক্রিপটোকারেন্সিই মুদ্রার ভবিষ্যৎ। তার মতো আরো কিছু পর্যবেক্ষকের মতে, এই ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণের লড়াইয়ে চিন এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অনেক এগিয়ে গেছে।

চিনের ডিজিটাল পেমেন্ট পদ্ধতি এখন পৃথিবীর সবচেয়ে অগ্রসর বলে মনে করা হয়। দেশটি এখন ‘ক্যাশলেস সোসাইটি’ অর্থাৎ নগদ অর্থের ব্যবহারবিহীন সমাজে পরিণত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। ২০১৯ সালে চিনে প্রতি পাঁচটি লেনদেনের চারটিই হয়েছে উইচ্যাট-পে বা আলিবাবার আলিপে’র মাধ্যমে।

ফেসবুক এখন তাদের ডিজিটাল কারেন্সি লিব্রার পরিকল্পনায় অনেক কাটছাঁট করেছে। তারা নোভি নামে একটি ই-ওয়ালেট চালু করার পরিকল্পনা করছে। চলতি বছরের শেষ দিকে মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপেও পাওয়া যেতে পারে এটি। লিব্রাকে নিয়ে চিন ও ফেসবুকের একটা চাপা রেষারেষি আছে বলে, মনে করেন অর্থনীতিবিদেরা।

তবে একটা পার্থক্য হলো- ডিসিইপি রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত, আর বিটকয়েন বা ইথারিয়াম রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণমুক্ত- এটা কেন্দ্রীভূত নয় এবং অর্থব্যবস্থারও বাইরে। যাই হোক চিন এই নতুন ডিজিটাল অর্থব্যবস্থা চালু করতে সফল হলে বিশ্ব শাসনের ক্ষেত্রে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। যার ফলে চাপে পড়তে পারে আমেরিকা।

বিটকয়েন নামের ডিজিটাল মুদ্রার কথা অনেকেই জানেন। এর সূচনা হয়েছিল ২০১৪ সালে পশ্চিম চিনের এক গোপন স্থান থেকে, তৈরি করেছিলেন শ্যান্ডলার গুও নামে চিনের এক উদ্যোক্তা। তার মনে হয়েছিল, বিটকয়েন একদিন পৃথিবীকে বদলে দেবে, ডলারকে সরিয়ে পরিণত হবে পৃথিবীর প্রধান মুদ্রায়।

বিটকয়েন তৈরির জন্য লাগে বহু কম্পিউটার, এতে বিদ্যুৎ খরচ হয় প্রচুর। শ্যান্ডলার গুও এজন্য ব্যবহার করেছিলেন জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র, আর এতে তার অংশীদার ছিলেন চিনা সরকারের এক স্থানীয় কর্মকর্তা।

মেশিনগুলোর ক্ষমতা ছিল পৃথিবীর সব বিটকয়েনের ৩০ শতাংশ উৎপাদন করার – যাকে বলে মাইনিং। তবে বিটকয়েন প্রস্তুতকারক শ্যান্ডলার গুও এখন নতুন এক শক্তির উত্থান দেখতে পাচ্ছেন।

সেটা হচ্ছে চিন দেশের তৈরি একটি ডিজিটাল মূল্য পরিশোধের ব্যবস্থা। এর নাম ডিজিটাল কারেন্সি ইলেকট্রনিক পেমেন্ট বা ডিসিইপি। বলা যায়, এটা হচ্ছে চিনের মুদ্রা ইউয়ানের একটি ডিজিটাল সংস্করণ।

গুওর বিশ্বাস, এই ডিসিইপি একদিন পৃথিবীর সর্বপ্রধান মুদ্রা হয়ে উঠবে। একদিন পৃথিবীর সবাই ডিসিইপি ব্যবহার করবে।

গুওর যুক্তি, চিনের বহু মানুষ এখন থাকেন চিনের বাইরে। এক পরিসংখ্যানে বলা হয় তিন কোটি ৯০ লক্ষ চিনা এখন বিদেশে বাস করেন। এই লোকদের যদি চিনের সাথে যোগাযোগ থাকে, তাহলে তারা এই ডিসিইপি ব্যবহার করবে এবং তা এই কারেন্সিকে এক আন্তর্জাতিক কারেন্সিতে পরিণত করবে।

অনেকেরই আশঙ্কা, এটা আসলে কতটা সফল হবে এবং আরো একটা উদ্বেগ দেখা দিয়েছে যে, চিন হয়তো দেশের নাগরিকদের ওপর নজরদারি করতে ব্যবহার করতে পারে।

বিটকয়েনের মতোই একটা প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিসিইপি; যাকে বলে ব্লকচেইন। এটা হচ্ছে এক ধরনের ডিজিটাল হিসাবের খাতা। যা লেনদেন যাচাইয়ের জন্য ব্যবহার করা হয়। ব্লকচেইনে সেই নেটওয়ার্কে করা সব লেনদেনের রেকর্ড রাখা থাকে। আর নতুন লেনদেন যাচাই করার কাজে ব্যবহারকারীরাও ভূমিকা রাখেন।ব্যবহারকারীরা যদি একে অপরকে তাদের ফোনের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করতে চান- তাহলে তাদের ব্যাংকের কাছে যাওয়ার দরকার হচ্ছে না।

চিন পরিকল্পনা করছে, এ বছরের শেষের দিকেই তারা ডিসিইপি চালু করবে। কিন্তু চিনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখনো এর কোনো নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করেনি। এ বছরের প্রথম দিকে চিনের বাছাই করা কিছু শহরে ডিজিটাল কারেন্সি ট্রায়াল শুরু হয়।পুরোপুরি চালু হলে ব্যবহারকারীরা তাদের ব্যাংক কার্ড-এর সাথে একটা ডাউনলোড করা ইলেকট্রনিক ওয়ালেট সংযুক্ত করতে পারবেন, যা দিয়ে অর্থ লেনদেন এবং স্থানান্তর করা যাবে।

চিনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন চাপের মধ্যে আছে যেন এই ডিজিটাল কারেন্সি চালুর প্রক্রিয়া দ্রুত হয়। কারণ তারা চায় না ফেসবুকের লিব্রা বিশ্বের প্রধান ডিজিটাল কারেন্সি হয়ে উঠুক।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, চিন চেষ্টা করছে ইউয়ানকে আর্ন্তজাতিক মুদ্রায় পরিণত করতে – যাতে তা ডলারের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে। বর্তমান বৈশ্বিক অর্থব্যবস্থা এবং তা চালানোর যন্ত্রগুলো গড়ে তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র। চিন  মনে করছে, অন্য কিছু দেশ যদি চিনা মুদ্রা ব্যবহার করে তাহলে তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রভূত্ব ভাঙতে পারবে। বিটফুল ছদ্মনামধারী একজন চিনা ক্রিপটোকারেন্সি পর্যবেক্ষক এ মত দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, ক্রিপটোকারেন্সিই মুদ্রার ভবিষ্যৎ। তার মতো আরো কিছু পর্যবেক্ষকের মতে, এই ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণের লড়াইয়ে চিন এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অনেক এগিয়ে গেছে।

চিনের ডিজিটাল পেমেন্ট পদ্ধতি এখন পৃথিবীর সবচেয়ে অগ্রসর বলে মনে করা হয়। দেশটি এখন ‘ক্যাশলেস সোসাইটি’ অর্থাৎ নগদ অর্থের ব্যবহারবিহীন সমাজে পরিণত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। ২০১৯ সালে চিনে প্রতি পাঁচটি লেনদেনের চারটিই হয়েছে উইচ্যাট-পে বা আলিবাবার আলিপে’র মাধ্যমে।

ফেসবুক এখন তাদের ডিজিটাল কারেন্সি লিব্রার পরিকল্পনায় অনেক কাটছাঁট করেছে। তারা নোভি নামে একটি ই-ওয়ালেট চালু করার পরিকল্পনা করছে। চলতি বছরের শেষ দিকে মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপেও পাওয়া যেতে পারে এটি। লিব্রাকে নিয়ে চিন ও ফেসবুকের একটা চাপা রেষারেষি আছে বলে, মনে করেন অর্থনীতিবিদেরা।

তবে একটা পার্থক্য হলো- ডিসিইপি রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত, আর বিটকয়েন বা ইথারিয়াম রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণমুক্ত- এটা কেন্দ্রীভূত নয় এবং অর্থব্যবস্থারও বাইরে। যাই হোক চিন এই নতুন ডিজিটাল অর্থব্যবস্থা চালু করতে সফল হলে বিশ্ব শাসনের ক্ষেত্রে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। যার ফলে চাপে পড়তে পারে আমেরিকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 + nine =