নতুন ধরনের ড্রোন আবিস্কারঃ বাঙালি মেয়ে অন্বেষার সাফল্য
ছোট বড় শুটিং -এ ড্রোন এখন অপরিহার্য। সেনাবাহিনীও তাদের নানা কাজে ড্রোনের ব্যবহার করে। তবে মূলত ছবি বা ভিডিও তোলা অথবা ধ্বংস্বাত্মক কোনও কাজেই ড্রোনের ব্যবহার। এবার ড্রোন উদ্ধার কাজেও বড় ভূমিকা নেবে। এই নতুন ধরনের ড্রোন আবিস্কার করে সাড়া ফেলে দিয়েছে এক বাঙালি মেয়ে। হাওড়ার অন্বেষা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই আবিস্কার বিশ্বজুড়ে হওয়া এক প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থানও অধিকার করেছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স এবং টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং এর তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী অন্বেষা যে প্রযুক্তিটা আবিষ্কার করেছে তা হল শব্দ শুনে তার উৎস সন্ধানী ড্রোন। ভূমিকম্প বা কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ধ্বংসস্তূপে কোথাও কেউ হারিয়ে গেলে, বা আটকে পড়লে যখন কেউ আর্তনাদ করবে, সেই শব্দ শুনে ড্রোন সাহায্যপ্রার্থীর অবস্থান দ্রুত জানিয়ে দেবে উদ্ধারকারীদের। এখনও পর্যন্ত উদ্ধারকাজে ড্রোনে শুধু মাত্র ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে ছবি তুলে তার ওপর গবেষণা করার জন্য। কিন্তু যেসব ক্ষেত্রে দৃশ্যমানতা কম তখন ক্যামেরা একদমই কার্যকরী না। যেমন কুয়াশা, ধোঁয়া, ঘন জঙ্গলে বা ভগ্নাবশেষের নিচ থেকে প্রাণের সন্ধান ক্যামেরা ড্রোনের দ্বারা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু নতুন প্রযুক্তির এই ড্রোন এই যে কোনও পরিস্থিতিতেই কাজ করতে সক্ষম।
এইসব গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য থাকা সত্বেও এই প্রযুক্তি তৈরিতে খরচ তুলনামূলক ভাবে অনেক কম যাতে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের প্রয়োজনে এটি পুরো মাত্রায় ব্যবহার করা যায়। গোটা কাজটাই অন্বেষা এবং তার বন্ধু অচল নিলহানী একসঙ্গে মিলে করেছে। আমেরিকার ‘উই রোবটিক্স্’ সংস্থার উদ্যোগে সম্প্রতি নাইরোবিতে হল এক প্রতিযোগিতা। যার পোশাকি নাম ‘আনইউজুয়াল সলিউশন্স কম্পিটিশন’। এই ড্রোন তৈরি এবং গবেষণার জন্য মার্কিন ওই সংস্থার থেকে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা পেয়েছেন অন্বেষা। মোট ন’টি দেশের প্রতিযোগীরা পৌঁছন চূড়ান্ত পর্যায়ে। অন্বেষা এবং অচলের পাশাপাশি আর্জেন্টিনা, ক্যামেরুন, কেনিয়া, জিম্বাবোয়ের প্রতিযোগীরাও ছিলেন তাঁদের উদ্ভাবন নিয়ে। বিচারকদের আসনে ছিলেন হার্ভার্ড-সহ বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞেরা। প্রতিযোগিতায় সেরা ঌ টি আবেদনপত্রের একটি হিসেবে মনোনীত হয় অন্বেষাদের উদ্ভাবন। কুশলতা দেখাতে পাড়ি দিয়েছিলেন কেনিয়ার নাইরোবিতে। সেখানেও সকলের কাছে তাদের এই কাজ ব্যপক প্রশংসা পেয়েছে এবং মূল প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে। এই প্রযুক্তিকে আরও উন্নত করে সমাজের বিভিন্ন স্তরে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলাই তাদের পরবর্তী লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন অন্বেষা।
অন্বেষা এবং অচল তাঁদের তৈরি ড্রোনকে আরও উন্নত করতে চান। যাতে বন্যা, বজ্রপাত বা তুষারপাতের সময়েও সেই যন্ত্র কাজ করে, তা নিয়েই তাঁরা গবেষণাও চালাচ্ছেন। অন্বেষার বরাবরই ইচ্ছে বিজ্ঞানী হওয়ার। সে জন্য গবেষণার পথেই এগিয়ে যেতে চান তিনি। আমাদের তরফ থেকেও অন্বেষার জন্য রইল শুভেচ্ছা এবং ভালবাসা।
Phataphati News ta.Pore bhalo laglo.