মহিষাসুর মর্দিনী
ইমরান হাসান
রুক্ষ এনাতোলিয়ার স্টেপ, আর্যদের বাসস্থল,
আর্য,ইউরাল এর অসংখ্য যাযাবর শ্রেণী দের মধ্যে একটা গোত্রপুঞ্জ, কত রক্ত, কত যুদ্ধ কত ত্যাগ এর পরে আজ আর্য রা এই অবস্থাতে পৌঁছেছে, কখনও নিজের জাত এর মাঝে আর কখনও অন্য গোত্র, আর্যদের বাঁকানো বজ্র(অস্ত্র) কখনই নিজেকে স্থির রাখেনি, সদা সর্বদা সে এক গোত্র হতে আরেক গোত্র এর মাঝে নিজের মহিমা বর্ণনা করে গেছে,
আর্য দের প্রধান রাজার নাম ইন্দ্র, ইন্দ্র সোমপায়ি অমিতাচারী। তবে আর্যদের প্রধান দেবতার নাম ব্রহ্মা।
ইন্দ্রের পিতা ছিলেন মুনি কশ্যপ, বিভিন্ন রাজারা মৃত্যুর পরে বিভিন্ন নামে নামিত হয়েছেন আর্যদের মাঝে, আর বিভিন্ন বড় বড় বীর যারা সহস্র গো-ধন এনে দিয়েছেন আর্য দের মাঝে তারাও আজকে দেবতার আসন অলংকৃত করছেন তাদের গোত্রের প্রতীক অনুযায়ী।
তবে তাদের জন্য সমস্যা হচ্ছে পূর্বে আরও একটি গোত্র আছে, যারা এমন ধরণ এর, বহু গোত্রের সমন্বয়, আর্য দের প্রতীক সিংহ, আর তাদের প্রতীক মহিষ তাদের নাম টাউরন গোত্র,তবে আর্যরা তাদের জানে একটাই নামে মহিষা।
তাদের গোত্র এর মাঝে সদস্য সংখ্যা অনেক বেশী, তাদের অস্ত্রের মাঝে এক ধরণ কালো রঙ-এর ধাতু আর পাথর এর ব্যবহার করা হয়, সেগুলো আর্যরা জানে না।
সেই ধাতু পাথর ভেঙ্গে ফেলতে পারে, আর্যদের পাথর আর তামার হাতিয়ার তাদের সামনে টিকতেই পারে না। আর্যরা এই কারণেই কশ্যপ সাগর-এর তীর এর কাছে চলে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।
দেবেন্দ্রর মাঝেও আজকাল সোম পানের চাহিদা অপেক্ষা অস্ত্রের চাহিদা মুখ্য আকার ধারণ করছে, তাদের অস্ত্র চাই, তাদের বাঁচার উপকরণ চাই, নয়তো আর্যদের হাতে ধ্বংস হওয়া আরও শত শত গোত্রদের মধ্যে একদিন আর্যরা নিজেরাও চলে যাবে।
তাদের বেদ রয়েছে, বেদ শ্রুতি, বেদব্যয়ী ঋষিরা, বেদকে নিজের মাঝে ধারণ করে রাখেন, সাম, ঋক, যজু এই সমস্ত ঋষিদের মাঝে বেদ বর্ণিত অবস্থাতে আছে।
ওঁরা অস্ত্র চালনা শিক্ষা দেন, ঋষি অঙ্গিরা, ঋষি বজ্র, এদের হাতে ইন্দ্র স্বয়ং শিখেছেন অস্ত্র চালনা করা, প্রায় লক্ষ-এর কাছাকাছি সদস্য থাকার পরেও তাদের থেকে অর্ধেক জনসংখ্যার একটি দলের কাছে তাদের বার বার পরাজিত হওয়া পীড়া দেয় তাদেরকে।
শিকার এর ক্ষেত্র নিয়ে সর্বপ্রথম তাদের মাঝে শুরু হয় ঝগড়া, ইউরাল এর কোলে, যে সকল চারনক্ষেত্র ছিল তাদের মাঝে চরে বেড়াত আর্যদের বিশাল পশুপাল, আর আর্যদের এই পশুপাল এর উপর নজর দেয় মহিষা গোত্র। তাদের বীর নসোস তার বাহিনী নিয়ে আক্রমণ করে তাদের পশুপাল কিন্ত আর্য ক্ষেত্রপালরাও তাকে বাধা দেবার অনেক চেষ্টা করে।
আর্য রক্তে রঞ্জিত হয় ভূমি,
তবে ইন্দ্র এর পরে হাজার এর উপর আর্যদেরকে প্রেরণ করেন, তাদের বিপক্ষে, কিন্ত তাদের বিশালাকার তীর ধনুক আর এর সাথে সেই অজানা ধাতুর অস্ত্রের কারণে তাদেরকে পরাজিত হতে হয়।
আর আজও সেটি বদলায়নি, বার বার প্রায় ৭ টি যুদ্ধে তারা পরাস্ত হয়ে আজকে কশ্যপ সাগর এর এক তীরে স্থান পেয়েছে আর্যরা।
সেই তীর এর পশ্চিম পাশে, চামড়ার তৈরি আর ঘাসের তৈরি শত শত তাবু, এর সাথে সাথে মাটির তৈরি ঘর।
একটি তাবু বেশ নজর কাড়ে আকারে বড় হবার কারণে, এটি আর্যরাজ ইন্দ্র এর তাবু।
আজকেও ইন্দ্র বসে আছেন তার সিংহাসনে, তার স্ত্রী ঊষা-মৈত্রায়নী তার পাশে বসে আছেন, যদিও বাইরে তিনি পরিচিত ইন্দ্রাণী হিসেবেই।
“এভাবেই যদি চলতে থাকে, তাহলে আমাদেরকে এক সময় শেষ হয়ে যেতে হবে’’ ইন্দ্র বললেন ,
স্বামী, আপনি চিন্তা করবেন না, আমরা অবশ্যই জিতব।
‘কি করে জিতব? আর আমার পরে মাতা অদিতি আর পিতা কশ্যপ এর ধারা কে সামাল দিবে সেটা আমার অজানা, আমার তো পুত্র নেই‘
মৈত্রায়নি চুপ করলেন, তার স্বর্ণাভ চুল আর গণ্ড যেন একটু হলেও মলিন হয়ে গেছে,
ইন্দ্রের কোন পুত্র নেই আছে শুধু এক কন্যা, তার নাম গৌরী, স্বর্ণাভ গায়ের রঙ বলেই তার এই নাম, তার চুল স্বর্ণাভ নয় বরঞ্চ কশ্যপের জলের ন্যায় বা ভ্রমর এর ন্যায় কৃষ্ণ।
এই কারণেই যেন তার রঙ হীরের মত চমকাতে থাকে, তার কৃষ্ণকেশের বন্যার নিচে।
গৌরী, মৈত্রায়নীর ন্যায় কোমল মতি নয়, সে অতি ঋজু আর প্রচণ্ড সাহসী নারী। তার পেলব বাহুযুগলে সিংহের ন্যায় শক্তি রাখে। এটা এমনিতে দেখলে বোঝা যায় না কেননা গৃহকর্মে সে সমান নিপুণা, সে ইন্দ্রাণী হলে অন্য অনেক ইন্দ্র অপেক্ষা অনেক ভালোই পরিচালনা করতে পারবে গোত্র। কেননা তার মাঝে সোম এর উন্মত্ততা নেই, সোম সে পান করে তবে অতি পরিমিত আর শুধু উৎসব এর দিনে। তার এই উপায় নেই যে সে রাজ্যভার গ্রহণ করবে , কেননা তার জন্ম হয়েছে স্ত্রী কুলে, স্ত্রীরা নেতা হন না আর্যদের মাঝে আর গৌরীর সমতুল্য যোদ্ধা বেশী না থাকার দরুন তার বর খোঁজার ব্যাপারেও ইন্দ্র বেশ শঙ্কিত ।
এই মুহূর্তে একটি অশ্ব বা ঘোড়ার গলা জড়িয়ে ধরে সে ছুটে চলেছে, তেপান্তর এর মাঠ দিয়ে, তার সামনে অস্তগামী সূর্যদেব।
তার পিঠে একটি ধনুক আর তার সাথে এক তূণীর তীর।
অতি দক্ষতার সাথে প্র্যতঞ্চা চড়াল সে ধনুকের, আর তার সাথে বেঁধে নিল একটি তীর, দূরে একটি মৃগ দৃশ্যমান হয়েছে, এমনিতে গোত্রের মাঝে কেউ তাকে এই দ্বন্দ্বে পরাজিত করতে পারে না, সে তীর নিক্ষেপে অজেয়, মাত্র এক চিলতে নড়াচড়া, এরপরে তার এক তীরেই ধরাশায়ী হয়ে শয্যা নিল হরিণ, অত দূর থেকেও লক্ষ্যভেদে ভুল হয়নি ইন্দ্র কন্যার।
হরিণটিকে বেঁধে নিল সে, তার ঘোড়া হয়দেব এ সমস্ত ছোট খাটো রক্তের গন্ধে ভয় পায় না, সে ছোট থাকাতে একবার বাঘের হাতে যখম হয়েছিল, তখন হয়দেব তাকে নিয়ে এসেছিল সমস্ত রাস্তা তার পিঠে করে, সেই সময় থেকেই তারা দুইজন সাথী। আজকেও এই হরিণ সেই নিয়ে যেতে পারবে যেমন প্রতিদিন নিয়ে যায়।
রাত এর আঁধার ও তার গতি রোধ করতে পারল না, পারবেও না এই বন তার পরিচিত এই পথে কোন পশু তাকে আক্রমণ করবে না আর কোন গোত্রের যোদ্ধার সাহস নেই তার গায়ে একটা টোকা দেবার, বাসাতে পৌছাতে পৌছাতে পরদিন সকাল হয়ে গেল।
যখন বাসাতে ফিরল সে, রক্তে মাখামাখি। আসতে আসতে পথের মাঝেই হরিণ এর চামড়াটা ছিলে নিয়েছে সে। তার মা তাকে দেখে হা-হুতাশ করে উঠলেন,
“যে মেয়েকে দুইদিন পরে বিবাহ যজ্ঞে সমর্পণ করতে হবে সেই মেয়ে আজকে এই বেশে“।
“বাদ দাও তো মা, এই দেখ কেমন হরিণ নিয়ে আসলাম “
তার পিতা এসে দেখলেন, যদিও ভিতর ভিতর তার মাঝে গর্ব হল, কিন্ত বাইরে কাঠিন্য ধরে রাখলেন, কন্যাদের এসব শোভা পায় না।
“বাবা তোমার এই সব মায়ার রাগ আমার কাছে ভালো লাগে না, খুব ভালো করেই জানি কত খুশি হয়েছ আমার উপরে“
এক মুহূর্তের জন্য বিস্তৃত হলেন ইন্দ্র, মনে হল যদি তার এই কন্যা এই গোত্রের ভার নিত, তিনি কি এই রীতিকে ভেঙ্গে ফেলবেন?
যেমনটি তার পিতার চতুর্থ পূর্ব পুরুষ মৃদঙ্গ ভেঙেছিলেন, তিনি প্রথম ছিলেন যিনি আর্যদের মাঝের গোত্রের অভিমানকে ভেঙ্গে তাদেরকে এক করে দিয়েছিলেন। এই কারণে আজ তারা আরও অধিক শক্তি এর অধিকারী। সত্য যে তার কন্যার সমান যোদ্ধা এই গোত্রে বিরল, কিন্ত এটাও সত্য যে আর্যদের মাঝে নারীরা নেতৃত্ব দেন না।
তবে তার চিন্তাতে ছেদ পড়ে গেছে, কেননা তার সেনাপতি বরুণদেব তার কাছে এসে উপস্থিত হয়েছেন,
“দেবেন্দ্র, পূর্বের দিকে মহিষা গোত্র আক্রমণ করেছে। আমাদের মাঝে সেনানায়ক এর অতি অভাব এই মুহূর্তে, আপনি যদি তাদেরকে নেতৃত্ব দান এর মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যান তাহলে আমাদের হতোদ্যম সৈন্যরা আবারও বল ফিরে পাবে“
ইন্দ্র রণবেশ ধারণ করে বেরিয়ে গেলেন তাদের সাথে,
ভয়ঙ্কর অবস্থা, প্রায়, পাঁচশো অশ্ব এবং সমান সংখ্যক মহিষারোহী যোদ্ধা এসে উপস্থিত হয়েছে, তাদের রথ এর চাকার আঘাতে চারিদিকে ধুলো উড়ছে।
বিশাল দেহ তাদের, তামাটে রঙের যোদ্ধা, আর্যদের ন্যায় না এরা।
ইন্দ্র সবাইকে ঝাপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিলেন, তার অধীনে প্রায় তিনশ রথ আর পাঁচশো পদাতিক আছে, এই কারণেই প্রথম থেকেই পিছিয়ে পড়তে শুরু করলেন তারা।
প্রবল যুদ্ধ শুরু হল, কিন্ত এরই মাঝে, কোন এক ঘোড় সওয়ার ছিল যে, অন্যদের থেকে অনেক দ্রুত গতির ছিল, সহসা বরুণদেবকে পাশ কাটিয়ে তার হাতে বিশাল এক ধনুক দৃশ্যমান করল সে।
কিছু বুঝে উঠার আগেই ইন্দ্রের বুকে তীর বিদ্ধ হল, পড়ে গেল তার নিথর দেহ
সমস্ত সৈন্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যাবার মত অবস্থা হল, যে যেদিকে পারছে পালাচ্ছে, বরুণদেব ত্রস্ত হাতে তার দেহটি তুলে নিলেন।
ইন্দ্রের মৃতদেহ নিয়ে দশজন এর ন্যায় যোদ্ধা এসে উপস্থিত হলেন সেখানে, সেনাপতি বরুণদেব তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, আলু থালু বেশে ছুটে এসে মৈত্রায়নী তীক্ষ্ণ বিলাপ করে উঠলেন তা দেখে,
আছড়ে পড়ে কাঁদতে শুরু করলেন ইন্দ্রের শবদেহের পাশে, “ইন্দ্রাণী এখন কান্নার সময় নেই , পালাতে হবে, কেননা মহিষাদের সেনার সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করে তারা এদিকেই আসছে“।
তবে গৌরী এর ভাষা অন্যরকম, তার চোখেও জল, কিন্ত এর সাথে সাথে তার পিতার প্রতি নমনও আছে, তার পিতার পাশে পড়ে থাকা বজ্রটা তুলে নিল সে।
“সেনাপতি রথ তৈরি করুন“
“কি বলছেন আপনি“
যা বলছি তাই করুন, এই ভাবে পালিয়ে আর কতদিন, আর আমার রথ এর প্রয়োজন নেই, আপনাকে রথ এর দায়িত্ব নিতে বলেছি আপনার নিজের জন্য,
আমি এবার যুদ্ধে যাচ্ছি, আমার নিজের বাহিনী আমার নিজের ঘোড় সওয়ারদেরকে সাথে নিয়ে, যাদেরকে নিজের হাতে গড়েছি আমি ।
বাইরে গিয়ে শঙ্খ নাদ করল গৌরী, আর সাথে সাথে আশে পাশে থেকে, যে সমস্ত যুবক আর যুবতিরা ছিল, যারা এখনও অষ্টাদশী হয়নি, তারা সবাই এসে দাঁড়াল, মাঝে মাঝে গৌরী এদেরকে নিয়ে চলে যেত দূরের তৃণভুমিতে, এরা সকলেই ঘোড়ার উপরে সরাসরি চড়তে পারে, রথ এর দরকার হয় না, এসবকে এতদিন খেলা ভাবলেও, আজকে সেটা পরিষ্কার হল।
“আমাদের পিতারা বলে থাকেন, আমরা নাকি এখনও যুদ্ধে যাবার উপযুক্ত নই, কিন্ত আজকে সেটি ভেঙ্গে দেবার সময় এসে গেছে,চল সবাই আমার সাথে“
এই বলেই নিজের ধনুক আর তীর নিয়ে হয়দেব এর পিঠে চড়ে বসল সে, অন্যরাও দৌড়াতে শুরু করেছে, মাঠে চড়া বুনোঘোড়া দেরকে নিজের নিজের দেওয়া নাম ধরে ডাকতে লাগলো তারা, যে ঘোড় সওয়ারিকে সবাই এতদিন মনে করেছিল খেলা, কখন কখন তার মাঝেই তারা শিখে গেছে যুদ্ধ করা, গৌরীর নেতৃত্বে, নারী পুরুষ সকলেই।
এরপরে তারা পৃথিবী কাঁপিয়ে রওনা দিল নিজেদের বর্শা আর তীর ধনুক নিয়ে।
টাউরনরা ভেবেছিল, এখন আর কোন বাধা নেই, কিন্ত এক নারীর নেতৃত্বে তারা এতজনকে দেখে অবাক হল, তাদের মাঝে নারীর নেতৃত্বও আছে, এই কারণে তারা নারীকে খাটো করে না, কিন্ত আর্য নারীদের মাঝে এত শৌর্য এর আগে তারা দেখেনি।
আর আরও আশ্চর্যের বিষয় এরা কেউ রথে না, সরাসরি ঘোড়ার পিঠে বসে আছে।
গৌরী নির্দেশ করল, তাদেরকে তার অশ্রু ভেজা চোখ নিয়েই, তারা সবাই সজ্জিত হয়ে সার বেঁধে দাঁড়িয়ে গেল,
এরপরে শুরু হল আক্রমণ ।
তারা লক্ষ্য করল, তাদের আক্রমণ এর ধার বেশী হলেও, ধাতুর অস্ত্র শুধু মাত্র তামার হবার কারণে তারা মার খেয়ে যাচ্ছে, এরা সম্ভবত আকরিক লোহার অস্ত্র ব্যবহার করে।
তাদের ঘোড়সওয়াররা একটা বৃত্ত এর মত রচনা করে বৃষ্টির মত তীর নিক্ষেপ করে যাচ্ছে, তবে তাদের সাথে হাতাহাতি লড়াইতে পারছে না এর পরেও তাদের আটশর বিপরীতে তারা মাত্র দুইশত জন, তবে এরই মাঝে তারা এত সময় লড়তে পারবে যাতে সব গোত্রবাসীরা পালাতে পারবে।
তাদের মাঝে একজন তীরন্দাজকে দেখল সে যার অশ্বের গতি অন্যদের তুলনায় অনেক বেশী, এই সেই যে তার পিতা কে বিদ্ধ করেছে, তবে এই তীরন্দাজও জানে না, হয়দেব এর গতি সম্পর্কে।
সেও তার সাথে সাথে পাল্লা দিল। হামলাকারীর রথ খুব হালকা কিন্ত শুধু ঘোড়ার গতির সামনে তার টেকার মত সম্ভাবনা ছিল না, ক্রমাগত তীর নিক্ষেপ করে যাচ্ছিল সে গৌরী এর দিকে, কিন্ত গৌরী ছিল অচল অটল, পর্বত এর ন্যায়।
প্রথমেই এগিয়ে গেল গৌরী তাকে ছাড়িয়ে অনেক দূর পর্যন্ত, এরপরে অর্ধগোলক এর মত করে একপাক ঘুরেই তার সম্মুখিন হল, আর তার ধনুকে তীর যোজনা করে ফেলল সে, তার কানের পাশ দিয়ে চলে গেল তীর, কিন্ত গৌরীর নিশানা ভুল হল না, তার এক তীর এর আঘাতেই সেই যোদ্ধার ভবলীলা সাঙ্গ করে দিল সে।
এটা ছিল তাদের সেনাপতি মুড়া, তাকে হত্যার সাথে সাথে সামনের বাহিনীও ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল, প্রায় অর্ধেক এর মত রথকে ভেঙ্গে তারা পালিয়ে গেল পিছন এর দিকে, আর গৌরীর বাহিনীর মধ্যে বিশজন এর মত নিহত আর এর কিছু বেশী জখম হয়েছে।
যুদ্ধ যখন শেষ হল তখন বিকেল নেমে গেছে, আর্যরা রাতে লড়ে না, তবে টাউরনরা লড়ে, এই জন্য তারা অসুর নামে পরিচিত আর্যদের মাঝে।
এই বিজয় অনেক বড় হত যদি ইন্দ্র, দ্রক্ষ না গত হতেন।
এই মুহূর্তে তাদের এই প্রধান গোত্রে গৌরীর দুইশ সৈনিক বাদে আর আছে মাত্র আগের সেনা এর আড়াইশ, এ ছাড়া তেমন কেউ নেই যে রক্ষা করতে পারবে তাদেরকে, আর হাজার চারেক মানুষ এর জন্য মাত্র সাড়ে চারশ, অনেক ছোট সংখ্যা ।
তাদের কে সরে যেতে হবে,
এই কারণেই, সে আর না থেমে, তদের সেনাকে নিয়ে রওনা দিল, তার পিতার দেহকে গাছ গাছড়া দিয়ে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে, সৎকার করল সে, মুখাগ্নি দান করল পিতাকে, তখন বিলাপ করে কাঁদল সে। যেন আহত সিংহী গর্জন করে চলেছে তাকে দেখে মনে হল সেটা।
দুই দিন টানা চলার পরে, আরেকটি সবুজ বনভূমি এর দেখা পেল, এ দিকে আগে আসত না তারা, একটা পাথর এর দেওয়াল আলাদা করে রাখত তাদেরকে, কিন্ত কোন কারণে ধসে গেছে সেটা এখন তার মাঝেই আছে এটা, এর আগের চাইতে হাজার গুণে এই জায়গাটি সুন্দর, হরিণ, ময়ুর, বুনো গরু, আর ঘোড়ার ডাকে চারিদিক মত্ত হয়ে আছে।
এরই মাঝে বসত তৈরি করতে শুরু করল তারা, আর গৌরী নিজেকে ধৌত করতে গেল ঝরনা এর ধারে, নিজেকে যখন জলে সঁপে দিয়েছে তখন একটা জিনিস লক্ষ্য করল সে, এই সমস্ত পাথর এর মাঝে, কোন একটা সাদা কিছু বার বার ঝক ঝক করছে, পাথর টা তুলে নিল সে।
উঠে এসে পোশাক পরল,
“কি এটা“, সেই পাথরটা নিয়ে উঠে এসেছিল সেটার দিকে চেয়ে বলল
তাদের কামারশালার প্রধান কামার এর কাছে দিল সে এটা, “এর মাঝে কি আছে তা জানতে চাই“
দুই দিন পরে তাকে ডেকে পাঠাল সে, এই মুহূর্তে দলের কোন নেতা নেই, ঋষিদের মাঝে আলোচনা চলছে কে নেতা হতে পারে, এর মাঝে বেশ কয়েকজন এর নাম আছে, এমনকি প্রথম বার এর মত কোন নারী হিসেবে গৌরীর নামও আছে এর মাঝে।
“ইন্দ্রপুত্রী, এই পাথর এর মাঝে রাং নামের এক জাত এর ধাতু আছে, এটা সুমেরে ব্যবহার করা হয়, এর সাথে যদি তামা মিশান তাহলে ব্রোঞ্জ নামের এক জাতের অতি শক্তিশালী ধাতু এর জন্ম হয়“ এর বলেই তো সুমেরীয়রা নিজেদের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে।
“এই ধাতু আরও আছে?“
জি, আমরা এর খোঁজ আরও পেয়েছি,
“তাহলে তাড়াতাড়ি তৈরি করুন, আর কাঠুরিয়া দেরকে বলুন আমাদের আরও কাঠ দরকার, রথ এর জন্য, খোলা ঘোড়ার পিঠে হয়ত এক আধ দিন যুদ্ধ করা যায় কিন্ত সত্যিকার এর যুদ্ধের জন্য রথ দরকার“
“আমার পিতার হন্তারক ওই মোষবাহীদেরকে রৌরব দর্শন করাবো আমি“
নিজে হাত লাগালো সে কামারদের কাজে, আর কাঠ ফাড়াতে, যেখানে অন্য বয়স্ক পুরুষেরা হতোদ্যম হয়ে গেছে, সেখানে এই নারী আর তার অধীনের কিশোর-কিশোরীরা দেখিয়ে দিল যে তারা কাজ করতে পারে। তার জন্য আলাদা করে অস্ত্র তৈরি করল একটি, কামার প্রধান, সেটি নসোস বা ক্রিট দ্বীপ এর দেবতা পোসাইডন এর অস্ত্রের মত দেখতে অনেকটা, তিনটি ফলা, আর পিছন এর দিক বর্শা এর ন্যায়, সেটার নাম দিল সে ত্রিশুল। গৌরী অনেকক্ষণ চেয়ে ছিল সেই অস্ত্রের দিকে যখন সেটি তাকে দেওয়া হয়।
সেদিন এর সেই সাড়ে চারশ থেকে আজকে অন্যান্য আর্য গোত্র থেকে প্রায় আটশোর মত যোদ্ধা এসে উপস্থিত হয়েছে, কেউ কেউ যে এতে ঈর্ষান্বিত না তা নয়, কিন্ত গৌরীর যুদ্ধকৌশল এর কারণে তাকে দ্বন্দ্বে আহ্বান করার মত শক্তি তাদের কারো নেই।
কেননা ঈর্ষাকারীরা যোদ্ধা নয়, বা টাউরন গোত্রের শক্তির সহায়তা চাইবে এই সাহসও তাদের নেই।
নির্দিষ্ট দিনে, গৌরীর অধীনে, প্রায় বারশো যোদ্ধা চলল তাদের সেই আগের ভুমির দিকে, সেটিকে পুনরুদ্ধার করতে হবে।
তাদের সামনের রথে গৌরী, আর হয়দেব টানছে সেই রথকে,তার হাতে সেই ত্রিশূল।
তারা আগে থেকেই জেনে গেছিল তাদের আগমন এর কথা, এই কারণে তারাও তৈরি হয়ে ছিল।
প্রচণ্ড ঝঞ্ঝার মত তারা ঝাপিয়ে পড়ল, তাদের উপরে কিন্ত আর্যদের কাছে যে নতুন করে ব্রোঞ্জ এর হাতিয়ার চলে এসেছে এটা ছিল টাউরনদের অজানা, তাদের উপরে আর্যদের মুহুর্মুহু আক্রমণে বিপর্যস্ত টাউরনরা লক্ষ্য করল, আজকে ব্রোঞ্জ এর হাতিয়ারে তারা অনেক বেশী শক্তিশালী হয়ে গেছে, আর তাদের মাঝে সেই শক্তির উৎস এক নারী, গৌরী তার ত্রিশূল এর আঘাতে তাদের প্রধান সেনাপতিকে আবারও সমাপ্ত করল।
তারা পালাতে বাধ্য হল। এসে উপস্থিত হল তাদের রাজধানীতে, তারা আর্যদের তুলনায় নগর সভ্যতার দিক থেকে অনেক সভ্য। তাদের রাজা শম্বর, যাকে সবাই চেনে মহিষাসুর হিসেবে, হঠাৎ গৌরীর অমিত বিক্রম আর রূপ লাবণ্যর কথা শুনে মোহিত হয়ে গেল যেন “এই কন্যা আমার মহিষী হবার উপযুক্ত“।
এই কন্যাকে তার চাই।
সে প্রায় দুই হাজার এর বাহিনী নিয়ে রওয়ানা হল সেইদিনই।
এক সপ্তাহ কেটে গেল, পরিশ্রম আর অনুশীলনে
গৌরীর বাহিনী, বেশ পরিশ্রান্ত, এক রাতে আগুন এর সামনে গোল হয়ে ছিল তারা।
“এরপরে যদি কেউ ইন্দ্র হয়, তবে তা হবে আমাদের গৌরী, সে হবে ইন্দ্রাণী আমাদের, সবাই বলে উঠল।“
“কিন্ত একটা ছেলে বাঁধ সাধল, ইন্দ্রাণী অর্থ তো ইন্দ্রের স্ত্রী, গৌরীর নিজের একটি উপাধি থাকা উচিত, আমাদের মাঝের অভেদ্য দুর্গের ন্যায় সে, তার কারণেই আমরা বিজয়ী হচ্ছি, সেই জন্যই তার উপাধি সেরূপ হওয়া উচিত।“
গৌরী কিছুই বলল না ।
এরই মাঝে দূত এসে সংবাদ দিল, মহিষাসুর এর বাহিনী আসছে সামনে, তিনদিন এর মাঝে চলে আসবে, গৌরী উঠে দাঁড়াল, তাহলে শম্বর নিজে আসছে!
আচ্ছা! তাহলে তার সাথেই তার গোত্রকে দাস বানানো হবে।
সমগ্র গোত্রদের মাঝে সংবাদ দাও, শম্বর এর বাহিনী অনেক বেশী হবে সংখ্যাতে, তার বাহিনীকে রোধ করতে আমাদেরও বাহিনী বড় হতে হবে, আর সমস্ত ব্রোঞ্জের হাতিয়ারগুলো জড়ো কর।
শম্বর বিশালদেহী, একটি বিশাল যুদ্ধ-মহিষ এর পিঠে বসে আছে সে, এই কারণেই তার নাম মহিষা, যাকে আর্যরা বলে মহিষাসুর। তার বাহিনীর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে সাড়ে তিন হাজার এ।
সেই আগেই বলে রেখেছে, গৌরীকে অক্ষত, জীবিত অবস্থাতে ধরতে হবে।
গৌরী সর্বমোট আড়াই হাজার সৈন্যকে জোগাড় করেছে, তবে এদের মাঝে বারশো জন ছাড়া কারো কাছে ব্রোঞ্জ এর হাতিয়ার নেই।
ব্যুহ,রচনা করা শেষ, দুইদলের একদিকে আছে সাড়ে তিন হাজার আর অপর দিকে দুই হাজার এর মত, মাঝখানে আলোচনার জন্য ডাকা হল তাদেরকে, শম্বর এর হাতে খড়গ আর গৌরী এর হাতে বিশাল ত্রিশূল।
শম্বর এর মুখে তেলতেলে হাসি, তার বিশাল গোঁফ নেড়ে সে গৌরীকে বলল “হে ত্রিভুবন সুন্দরী, তোমার হাতে অস্ত্র মানায় না, মানায় তোমার মাথাতে রাণীর মুকুট, তুমি আমার মহিষী আর প্রধান সেনাপতি এর পদ অলংকৃত কর, তোমার মাঝে আমি আমার রাজ্যের ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছি, তোমার সাথে আমার বিবাহে তোমার গোত্র ও আমার হাত থেকে রক্ষা পাবে আর পাবে চিরস্থায়ী শান্তিচুক্তি“।
উঠে দাঁড়াল গৌরী ত্রিশূলটা তার সামনেই মাটিতে পুতে দিয়ে বলল গাঢ় স্বরে “যে কোন নারী কোন পুরুষকে পছন্দ করবে, যে বীর? নাকি যে অত্যাচারী? আমার পিতাকে যদি ফেরত দিতে পার, তবে আমি তোমার প্রস্তাব মেনে নিব, পারবে ফেরত দিতে? আর তোমার গোত্রের ভবিষ্যৎ সেটা আমিই বলে দিচ্ছি, আমাদের আর্যদের দাস হিসেবে কাটবে তোমাদের ভবিষ্যৎ!“
জ্বলে উঠল মহিষাসুর এর চোখ, “তবে তোমাকে বল দ্বারাই আমি অধিকার করব“
‘দেখা যাবে তা‘। গৌরী বলল
ব্যুহ রচনা শেষে প্রথমে তীরন্দাজরা নিজেদের কৌশল এর পরিচয় দিল, এর পরে দুইটি দল এর পদাতিক আর রথবাহীরা নিজেদের রণ নৈপুন্য আর কৌশল দেখাতে শুরু করল।
চারদিকে শুধু, বর্শার ঝনঝনানি আর রথ এর চাকার শব্দ।
এরই মাঝে শম্বর এর রথ দৃশ্যমান হল, সে গৌরী এর রথের চাকা লক্ষ্য করে তীর ছুড়ল, অগ্নিবাণ ।
তার চাকাতে আগুন ধরে গেল, তবে গৌরী মুহূর্তে হয়দেব এর বাঁধনকে মুক্ত করে, তার উপরে চড়ে বসল, হয়দেবকে মনে হচ্ছে, যেন ঘোড়া নয়, কোন সিংহ সে, তার উপরে ত্রিশূল হাতে সে।
আর এরই সাথে শঙ্খনাদ করল সে নিজের হাতের শঙ্খ নিয়ে।
মুহূর্তে পাশের ঝোপ ঝাড় ভেঙ্গে আরও পাঁচশ ঘোড়ার খুর এর ধ্বনি শোনা গেল, দুই পাশ থেকে খোলা ঘোড়ার পিঠে চড়ে প্রথমদিন এর মতই প্রায় চারশ ঘোড় সওয়ার এসে উপস্থিত।
এবার দুই দিক থেকেই তারা আক্রমণ চালাল, শম্বর এর বাহিনীর দিকে, এই রকম কৌশল এর আগে কখনও দেখেনি তারা,
পড়িমরি করে ছুটতে শুরু করল তারা, আর অপরদিকে জমে উঠেছে গৌরী বনাম শম্বর এর লড়াই, গৌরী শম্বর এর প্রতিটি খড়গ এর আঘাত তার ত্রিশূল কেটে দিচ্ছে নিজের সুনিপুণ শক্তিতে, তবে এরই মাঝে সে দেখতে পেল সূর্য পাটে বসার উপক্রম, “এই দুর্বৃত্ত বেঁচে যাবে, তা হতে পারে না“ নিজের হাতে একটি বাণ নিয়ে সে প্রার্থনা করল,
“যদি আমি আমার পিতার সন্তান হয়ে থাকি, যদি ধর্ম মেনে থাকি, তবে যেন এই বাণ ব্যর্থ না হয়“
বলেই সে চালালো সেই বাণকে।
একেবারে সরাসরি তার গলার কাছে গিয়ে ঢুকে গেল সেটা, আগেই তো অর্ধেক ছত্রভঙ্গ হয়ে গেছিল, এই অবস্থা দেখে বাকিরাও পালাতে শুরু করল, শম্বর তখনও ভূলুণ্ঠিত অবস্থাতে বেঁচে ছিল, “আমি বলেছিলাম না তোর ভাগ্য এই ত্রিশূল, এটা বলেই তার পিছনের বর্শাটা সে বিদ্ধ করল তার বুকে“ মহিষাসুর নিজে সমাপ্ত হল তার বাহিনীর সাথে সাথে।
দিনের শেষে হাজার এর মত বন্দি হয়ে গেল আর্যদের হাতে, তাদের নতুন রাজধানী অমরাবতী এর দিকে নিয়ে চলল তারা তাদেরকে,
ঋষি সাম, সমগ্র ইন্দ্রদের নির্বাচন করেন, গৌরীর অসাধারণ বীরত্বর পরে আর কারো সন্দেহ থাকল না যে আগামী রাজা অথবা রাণী কে হতে চলেছে।
গৌরীর জন্য এক রাজ্যাভিষেক যজ্ঞ এর অনুষ্ঠান করলেন তারা, দুগ্ধস্নান করানো হল তাকে, এরপরে যখন সে সিংহাসন কে অলংকৃত করতে যাবে, তখন তার নামে ইন্দ্রাণী গৌরীর জয় হোক, ইন্দ্রাণী গৌরীর জয় হোক, স্লোগান দিতে শুরু করল সবাই, তবে সে থামিয়ে দিল তাদের কে।
“আমি কোন ইন্দ্রের স্ত্রী নই যে আমাকে ইন্দ্রাণী নামে নামকরণ করাতে হবে, আমি গৌরী, আমি আমার নিজের বলে সিংহাসনে বসেছি, এই কারণে আমার নিজের পদ এর নাম আমি নিজে রাখব“
“কি হবে তা মা“ বললেন তার পিতৃতুল্য ঋষি সাম ।
“আমাকে সবাই বলছিল আমি নাকি ছিলাম এক অভেদ দুর্গের ন্যায় আপানাদের নিকট, তবে তাই হোক আমার নাম, আমার রাজপদ এর নাম, আজ থেকে আমার পদ এর নাম দুর্গা!“
“আমি দুর্গা! “
মহিষাসুর মর্দিনী দুর্গা!
জয় হোক মা দুর্গার! স্লোগান উঠল চারিদিকে আর তার মাঝেই সিংহচিহ্নিত আসনে বসে রইল গৌরী।
সেই সময়কাল থেকেই, দুইটি সিংহ এর মাঝে, এক নতুন দেবী হিসেবে স্বীকৃতি পান দুর্গা, যাকে নসোস আর আনাতলিয়ার মাঝের গুহাচিত্রে দেখা গেছে। আর আর্যদের প্রতীক সিংহ হবার দরুন তার দুইপাশে থাকত দুই সিংহ, সেই অসভ্য মহিষ কুলকে পরাস্ত করার ঘটনাকেই মহিষাসুর বধ এর কাহিনী হিসেবে জানতে থাকে সমগ্র বিশ্ব। পরে সেটিকেই পুরাণে লিপিবদ্ধ করা হয় আর আমরা জানি সিংহবাহিনী মহিষাসুর মর্দিনী দুর্গা শক্তি দেবীর কথা।