মিলবেন না-ধার্মিক মানুষেরা
ধর্ম পরিচয় না নিযে যাঁরা জীবনে মানবতার পথ ধরে চলতে চান, পশ্চিমবঙ্গের এমন মানবিক, যুক্তিবাদী, বিজ্ঞানমনস্ক মানুষেরা মিলিত হচ্ছেন। তাদের মতামত বিনিময়ের জন্য ৮ ডিসেম্বর, রবিবার সারাদিন ব্যাপী ‘না-ধার্মিক মানুষদের রাজ্য সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত হবে গোবরডাঙা গবেষণা পরিষৎ-এ শহিদ গৌরী লঙ্কেশ সভাকক্ষে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর গোবরডাঙা গবেষণা পরিষৎ-এ প্রথম প্রস্তুতি সভা থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি ও সম্মেলনের লক্ষ্য সম্পর্কিত খসড়া তৈরি হয়েছে।
উদ্যোক্তাদের মতে, অন্ধবিশ্বাসের গোঁড়ামি ভয়ংকর জটিলতার পঙ্কিল আবর্তে মুখ থুবড়ে রয়েছে। ভারতীয় সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ, ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদ, বাকস্বাধীনতার মৌল বিষয়গুলি পদে পদে ভূ-লুণ্ঠিত। আজ যা জরুরি হয়ে মাথা তুলছে, তা হল রাষ্ট্রীয় ধর্মসন্ত্রাসের বিভীষিকা। এর বিরুদ্ধে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের দ্বারা সমাজ জাগরণ প্রয়াস সংগঠিত করা একান্তভাবে জরুরি। কিন্তু কিভাবে? সেই পথ খোঁজার উদ্দেশ্যে খোলা মনে বিজ্ঞান চেতনায় উদ্বুদ্ধ যুক্তিবাদী মানবিক সমমনস্ক মানুষদের নিয়ে একটি সারাদিনের সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। আলোচ্যসূচিতে থাকবে-সর্বসাধারণের সুস্থস্বাভাবিক জীবনাচারণ ও দিনযাপন, অর্থনৈতিক বৈষম্য নাশ, শিক্ষা-স্বাস্থ্য-চাকুরির নিরাপত্তা, নাগরিক হয়রানি মুক্ত জীবনপ্রয়াস, বর্ণ বিভেদের(জাতপাত) সার্বিক অবলুপ্তি, সর্ববাঁধনমুক্ত নারী সমাজ-নারী স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি, সরকারি প্রয়াসে কোথাও কোনও ধর্মপালন নয়, জ্যোতিষমুক্ত-ভণ্ডামিমুক্ত নাগরিক জীবন ও আরও বহু প্রাসঙ্গিক বিষয়সমূহ।
‘না ধার্মিক’ নাম টা কেন দেওয়া হল! মানবতা,যুক্তিবাদীতা,বিজ্ঞান মনষ্কতা, এগুলোই তো প্রকৃত ‘ধর্ম’।ভারতের প্রাচীন শাস্ত্র তো এই ধর্মের কথাই বলে। তাই বর্তমানে মানুষের কাছে গুলিয়ে যাওয়া ‘ধর্ম’ এর চিত্র কে স্বচ্ছ করার জন্য এই দারুণ উদ্যোগ টির নাম ‘প্রকৃত ধার্মিক’ হলে কিন্তু বেশ হত।
ঠিক কথা হয় তো… তবে এটা ওই সংগঠনের দেওয়া নাম, তাই তারাই ভাল বলতে পারবেন কেন এই নাম দিয়েছেন। তবে আমাদের মনে হয় ধর্ম বলতে সিংহভাগ মানুষের কাছেই তো মানবতা, যুক্তিবাদীতা, বিজ্ঞান মনষ্কতা এই শব্দ ভাসে না। তাই সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের চিন্তার থেকে সামান্য আলাদা হতে চেয়েই এই না-ধার্মিক নামটা দেওয়া।