স্বতন্ত্র নাট্য দলের অনন্য প্রয়াস “জননী”
২৪ শে মার্চ, ২০২৩ বরানগর রবীন্দ্রভবনে কলকাতা স্বতন্ত্র নাট্য দলের “জননী” নাটকের চতুর্থ মঞ্চায়ন হয়। সুপরিচিত নাট্যকার শ্রী ইন্দ্রাশীষ লাহিড়ির এই নাটকে প্রাণদান ক’রে প্রতিভাবান অভিনেতা-নির্দেশক সায়ন চক্রবর্ত্তী যথেষ্ট মুন্সীয়ানার পরিচয় দিয়েছেন।
নাটকে রাজর্ষি ব্যানার্জী নামের একজন যুবককে দেখা যায় যার জগত হুইল চেয়ার আর তার নিজের ঘরে বন্দী। বাবাকে হারানোর পর তার মা তার ওপর এতটাই যত্নশীল হয়ে ওঠেন যে তিনি সব দায়িত্ব নিজের হাতে পালন করেন এবং রাজর্ষিকে এক মুহুর্তের জন্যও একা ছাড়েন না। কিন্তু তাঁর এই যত্ন একটা সময়ের পর রাজর্ষিকে দমবন্ধকর পরিস্থিতির সম্মুখীন করে তোলে। রাজর্ষি এই পরিস্থিতির থেকে মুক্তি পেতে বেশ কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে। কিন্তু অসফলতা তাকে তার মায়ের ওপর আরও বেশি করে নির্ভরশীল করে তুলতে বাধ্য করে। বাইরের জগতের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। রাজর্ষির জায়গা হয় প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ বাড়ির জানলাবিহীন একটা ঘরে যেখানে টিভি, মোবাইল কিছুই নেই, এমনকি ডাক্তারবাবু চেকআপের জন্য আসলেও তার মা কোনো মতেই একা ছাড়েন না।
রাজর্ষি জন্মদিনে উপহার কিনতে যাওয়ার সময় মিসেস ব্যানার্জীর আপত্তি থাকা সত্বেও ডাক্তারবাবুর অনুরোধে কয়েক ঘন্টার জন্য একজন নার্সকে আনা হয় রাজর্ষি দেখাশোনা করার জন্য। নার্স মন্জিরা তার যথাযথ দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করলেও অবশেষে রাজর্ষির ফাঁদে পা দেন। অজান্তেই তিনি তাঁর পেশেন্টকে তার যন্ত্রণাময় জীবন থেকে চিরতরে মুক্তি দিয়ে ফেলেন।
নাটকের অন্যতম গুরুত্বপুর্ণ চরিত্র নার্সের ভূমিকায় দেখা যায় থিয়েটার জগতের সুপরিচিত অভিনেত্রী ন্যান্সীকে। রাজর্ষির চরিত্রে এবং আবহ নির্মানে পরিচালক তাঁর বহুমুখী প্রতিভার পরিচয় দেন। নাটকের আলো পরিকল্পনা করেছেন অমিত পাল এবং প্রক্ষেপন করেন ভিকি। আবহ প্রক্ষেপনে ছিলেন শ্রীতমা বসু।