হেঁচকি হঠাৎ
হেঁচকি ওঠা খুব সাধারণ একটি বিষয়। খাবার খাওয়ার সময় বা গুরুত্বপূর্ণ কোনও কাজের মধ্যে, এমনকি কোনও কারণ ছাড়াই যখন তখন মানুষের হেঁচকি শুরু হলে তা নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিপাকতন্ত্রের গোলমালের কারণেই মানুষের হেঁচকি ওঠে।
চিকিৎসকদের মতে, হেঁচকির প্রধান কারণ দ্রুত খাবার গ্রহণ করা। দ্রুত খাওয়ার কারণে খাবারের সঙ্গে সঙ্গে পেটের ভেতর বাতাস প্রবেশ করার কারণে ‘ভ্যাগাস’ নার্ভের কার্যকলাপ বাধাগ্রস্ত হয়, ফলে হেঁচকি ওঠে। চেতনানাশক, উত্তেজনাবর্ধক, পার্কিনসন্স রোগ বা কেমোথেরাপির বিভিন্ন ধরণের ওষুধ নেওয়ার ফলেও হেঁচকি উঠতে পারে। এছাড়াও কিডনি ফেল করলে, স্ট্রোকের ক্ষেত্রে, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস বা মেনিনজাইটিসের ক্ষেত্রেও অনেকের হেঁচকি হতে পারে।
কিন্তু অধিকাংশ সময়ই হেঁচকি শুরু হওয়ার জন্য এসব কোনো কারণেরই দরকার হয় না। হাসি বা কাশির মধ্যে, অতিরিক্ত মদ্যপান, অতিদ্রুত খাবার গ্রহণ করা বা ঝাঁঝসহ পানীয় বেশি পরিমাণে খেলে হেঁচকি শুরু হতে পারে, তবে কোনো ধরণের কারণ ছাড়াও হেঁচকি আসাটা একেবারেই অস্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়।
হেঁচকি ওঠাটা খুবই স্বাভাবিক একটি ঘটনা এবং সাধারণত মিনিটখানেকের মধ্যেই তা স্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছে যায়। তবে হেঁচকি ওঠা দীর্ঘয়িত হলে থামানোর প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে মূলত দুইটি মূলনীতি অনুসরণ করা হয়।
একটি হলো রক্তে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া যেন শ্বাসনালীতে খিঁচুনি বন্ধ হয়। আরেকটি হলো শ্বাসপ্রশ্বাস ও গলধকরণের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা ‘ভ্যাগাস’ স্নায়ুকে উদ্দীপ্ত করা।
হেঁচকি থামানোর কয়েকটি সাধারন পদ্ধতিঃ
# কাগজের ব্যাগে নিশ্বাস ফেলা (ব্যাগের মধ্যে মাথা না ঢোকানোই ভাল)
# দুই হাঁটু বুক পর্যন্ত টেনে ধরে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়া
# বরফ ঠাণ্ডা জল খাওয়া
# কিছু দানাদার চিনি খাওয়া
# লেবুতে কামড় দেয়া বা একটু ভিনেগারের স্বাদ নেওয়া
# স্বল্প সময়ের জন্য দম বন্ধ করে রাখা
এসব পদ্ধতি অবলম্বনের পরও যদি হেঁচকি উঠতে থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।