কাজলবরণী ওগো কন্যে
শঙ্খিনী
গাত্রবর্ণ উজ্জ্বল না হলে স্টাইল করলে মানায় না। এমন অবসেশনে ভুগে থাকেন অধিকাংশ শ্যামলবরণী কন্যে। কিন্তু সত্যি কি তাই ? কালো যদি এত খারাপ-ই হয় তবে কেশ পাকলে মেয়েরা মনস্তাপ কেন করেন ? তারাশংকর মুখোপাধ্যায়ের ‘কবি’ উপন্যাসে নিতাই কবিয়ালের সেই উক্তি চিরন্তন মা, দুর্গার অপর রূপ -ও তো শ্যামা মাতৃমূর্তি। আদ্যাশক্তি মহামায়ার সেই রূপ তো ভুবনভোলানো।
কালো রং চিন্তার কোনো কারণ হতে পারে না। বিবর্ণ চেহারাতে কালো বা ফর্সা উভয়কেই অত্যন্ত বিশ্রী দেখায়। তাই সবার আগে প্রয়োজন ত্বকের স্বাস্থ্যবিধান।
প্রত্যেকের উচিত আপন গাত্রবর্ণ অনুযায়ী সাজগোজ করা। ফর্সা রঙে যে সাজ মানায়, চাপা রঙে সে সাজ একেবারেই খোলে না। গায়ের রং শ্যামলা হলে সে জন্য সাজগোজের কিছু নিয়ম রয়েছে। সে সব বিধি মানলে কালো মেয়েও হয়ে উঠবে অপরূপা।
ক্লিনজিং মিল্ক দিয়ে মুখ, হাত ভালোভাবে পরিস্কার করে সাবান ব্যবহার করুন। শুধু সাবানে মুখ-হাত ঠিকভাবে পরিস্কার হয় না। রাত্রে শোবার আগে অনেকেই নাইট ক্রিম ব্যবহার করেন। নাইট ক্রিমের আগে ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিস্কার করে নিন। না হলে ত্বকের অপরিস্কার অংশ ক্রিমের সঙ্গে মিশে যায়। এতে ত্বকের সমূহ ক্ষতি।
অকারণ প্রসাধনী ব্যবহার না করাই ভালো। প্রয়োজনে ফাউন্ডেশন, ব্লাশ অন প্রভৃতি ব্যবহার করলেও তা যেন গাত্রবর্ণের উপযোগী হয়।
খোলা চুলের চেয়ে শ্যামলীদের এলো খোঁপা বা বিনুনিতেই ভালো লাগে বেশি। না হলে টান টান করে চুল বাঁধুন। মুখের উপর চুল ফেলে রাখা শ্যামলীদের জন্য আদপেই স্টাইল স্টেটমেন্ট নয়।
পোশাকের রং নির্বাচন-ও দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। লাল রং শ্যামাঙ্গীদের আরো আকর্ষনীয় করে তোলে। তবে কালো রঙেও কাজলবরণী কন্যেদের ভালো লাগে। নীল্ বা সবুজ রং এদের এড়িয়ে চলাই ভালো। কালো রঙের পোশাকে লাল বা হলুদ রঙের ছোঁয়া থাকলে তা এদের জন্য অনবদ্য। মেটে সিঁদুর রং, কাঁচা হলুদ রং, গঙ্গাজলি রং, স্যালমন পিঙ্ক, ওল্ড রোজ, তামাটে রং, লালচে বাদামী প্রভৃতি অপেক্ষাকৃত ঘন রঙের পোশাকেই এদের মানায় ভালো। এককথায় এই সব রঙের পোশাকেই এঁরা অপরুপা হয়ে ওঠেন।
গাত্রবর্ণ উজ্জ্বল এমন তো অনেক নায়িকাই রয়েছেন। কিন্তু নন্দিতা দাসের গ্ল্যামার তাঁর শ্যামলা রঙে। ‘সব চরিত্র কাল্পনিক ‘ ছবিতে ব্ল্যাক বিউটি বিপস-কে মনে পড়ে? লাল বেনারসী বা কালো রঙের বা তসর রঙা শাড়ি, সে যাই হোক না কেন, বিপস ছিলেন ফাবিউলাস।