মাটির নীচে শহর!
আদিম যুগের মানুষজন গুহায় বসবাস করতেন। কালের আবর্তনে আজও আমরা সেই অভিজ্ঞতার সাক্ষী। এ যেন কল্পবিজ্ঞানেরই বাস্তব রূপ! খানিকটা ১৮৬৪ সালে জুলেভার্নের জার্নি টু দ্য সেন্টার অফ দ্য আর্থ-এর মতো। ঠিক তেমনটি না হলেও আজব এক শহরের সন্ধান পাওয়া গেছে এই পৃথিবীর মাঝে। পৃথিবীর গভীরে আরেক বিশ্বের খোঁজ। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, অস্ট্রেলিয়াতে রয়েছে এমন এক ভূগর্ভস্থ শহর। গোটা শহরটাই গড়ে উঠেছে মাটির তলায়। আর পাঁচটা আধুনিক শহরের মতোই। অ্যাডিলেড থেকে ৮৪৬ কিলোমিটার উত্তরে। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মানুষের বসবাস শহরটিতে।
অস্ট্রেলিয়ার এই ভূগর্ভস্থ শহরটির নাম কুবের পেডি। জন্ম ১৯১৫ সালে। শহরটির মূল বৈশিষ্ট হল বহুমূল্য রত্নের খনি। গোটা বিশ্বের মধ্যে ৯৫ শতাংশ ওপাল(opal) নামক রত্নটি পাওয়া যায় কুবের পেডি এলাকা থেকে। শহরটিকে বাইরে থেকে দেখলে তাজ্জব হতে হয়। চারিদিক জনমানব শূন্য। জায়গায় জায়গায় গুহা। সেই গুহাগুলি থেকে নেমে গিয়েছে সুড়ঙ্গের মতো সিঁড়ি। সেই সিঁড়ি চলে গিয়েছে গভীরে। সিঁড়ি ধরে নীচে নামলেই রূপকথা! কি নেই সেখানে? অত্যাধুনিক বাসস্থান। উচ্চপ্রযুক্তির নানা সরঞ্জাম। রয়েছে দামি হোটেল, বার, রেস্তোরা। সুইমিং পুল এমনকি চার্চও।
কেন এই শহর মাটির তলায়? তা জানতে হলে ফিরে যেতে হবে প্রায় একশো বছর আগে। অস্ট্রেলিয়ার একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চলে চলে তীব্র গ্রীষ্মের দাপট। গ্রীষ্ম কালে কুবের পেডি এলাকায় তাপমাত্রা ছাড়িয়ে যায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাই দারুণ দহন থেকে বাঁচতে শহরের বাসিন্দারা ঠিক করেন, মাটির তলাতেই পাকাপাকি ভাবে থাকার বন্দোবস্ত করবেন। যেমন ভাবা, তেমনি কাজ। মাটি খুঁড়ে থাকতে শুরু করেন। সেই শুরু। আজ কুবের পেডি বিশ্বের বিস্ময়।