আলো

শারদীয়া ভট্টাচার্য, গোবরডাঙ্গা, উত্তর ২৪ পরগনা ##

মিও আমোরে থেকে বেরোতেই সুপর্ণার গায়ের মধ্যে এসে পড়ল মেয়েটা। ‘দিদি দুটো টাকা দাও না। খাবো।’

– ‘কোথায় থাকিস তুই? স্কুলে যাস? স্কুলে রোজ খেতে দেবে।’

– ‘চোপ শালী।  স্কুল মারাচ্ছে। পয়সা দিবি না সেটা বল।’

মুখ খারাপ করে চলে যাচ্ছিল মেয়েটা। সুপর্ণা তাড়াতাড়ি এগিয়ে গেল। ‘এই নে এটা দেব।’ একশ টাকার নোটটা বাড়িয়ে দিয়ে বলল সুপর্ণা। ‘কিন্তু আমার কথা শুনতে হবে দাঁড়িয়ে।’

ঢক করে ঘাড় নাড়ল মেয়েটা। 

কিন্তু বেইমান এরা। টাকাটা ছোঁ মেরে নিয়েই দৌড়তে গেল। সুপর্ণার কেনা চকলেট কেকটা এগিয়ে দিল, ‘এটা নিবি না?’ নাছোড় সুপর্ণা হাত টেনে ধরল ওর।

বিশ্রীভাবে চেঁচিয়ে উঠেও মেয়েটা থমকাল।গালির বদলে টাকা আর খাবার? জীবনে প্রথম কেউ ভাল ব্যবহার করল ওর সাথে। 

সৎ মা অনেক ঝামেলা করলেও সুপর্ণা পুলিশের ভয় দেখিয়ে বের করে এনেছিল নরক থেকে বাপ-মা মরা ভিখিরি মেয়েটাকে।

সুপর্ণার মেয়ে সম্পূর্ণা মাদার্স ডে তে মায়ের কীর্তির কথা বলছিল গর্ব করে তার কলেজের ছাত্রদের।

এতটুকু শুনেই একটা ছেলে প্রশ্ন করল, ‘কিন্তু ম্যাম, মেয়েটার হাত ধরে কেক দিতে চাইলেও প্রথমে চেঁচিয়ে উঠল কেন বুঝলাম না তো?’

হেসে সম্পূর্ণা বলল, ‘আসলে সৎ মা রুটি করার বেলনা দিয়ে রোজ মারত আমার কনুই আর হাঁটুতে।’

2 thoughts on “আলো

  • May 18, 2019 at 5:46 pm
    Permalink

    ছোট হলেও ভাল গল্প। মন ভাল করে দেয়। ধন্যবাদ লেখিকা, ধন্যবাদ অবেক্ষণ পত্রিকাকেও।

    Reply
  • May 23, 2019 at 6:46 am
    Permalink

    অসংখ্য ধন্যবাদ পাঠক বন্ধু।

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − four =