আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম

শারদীয়া ভট্টাচার্য, গোবরডাঙা, উত্তর ২৪ পরগনা   ##



ফোন ধরতেই একজন মিহি স্বরে বলে উঠল, ‘ঋক সান্যাল বলছেন তো?’
– ‘বলছি।’
– ‘আমি সুগন্ধা মিত্র বলছি। নমস্কার।’
– ‘নমস্কার!’ ঋকের খুব চেনা এই নামটা। কিন্তু অনশোর কল আসার চিন্তায় মনেই পড়ছে না।
– ‘আমাকে চিনেছেন? আমি ভরসা থেকে বলছিলাম।’
ওহ। ইয়েস। ভরসার ম্যানেজার। মনে পড়েছে।
– ‘দেখুন… শুনেছেন নিশ্চয়ই,  আগামী রোববার ভরসার বার্ষিক অনুষ্ঠান। আপনি এইবারটা প্লিজ আসুন। মাসিমা খুব খুশি হবেন। প্লিজ, ওঁর জন্য… এবার পুরো অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্বে আপনার মা…’
একনাগাড়ে বলে যাচ্ছে সুগন্ধা।
-‘আমি চেষ্টা করব। কিন্তু মনে হয় পারব না। মাঝখানে ওকে থামিয়ে দিল ঋক। আমার অফিসের কিছু…’
-‘ আমি শুনেছি আপনি কিছুর বিনিময়েই রোববার অফিসের কাজ রাখেন না।’
-‘ চেষ্টা করব বললাম তো। আমি এখন রাখছি। মাফ করবেন। আমি অফিসে আছি…’
– ‘ওকে ওকে। অনেক ধন্যবাদ। রোববার দেখা হবে।’
কুট করে কেটে দিল সুগন্ধা।
মুডটাই খিঁচড়ে গেল ঋকের। মনের মধ্যে চাপা দিয়ে রাখা রাগটা আবার চাগিয়ে উঠল।

***

‘বাবু, তোরা দুজনেই একটু আসিস তো আমার ঘরে।’
ঋক আর সুমি খেয়ে উঠে উপমাদেবীর ঘরে যেতেই কথাটা বললেন তিনি।
-‘আমি স্থির করেছি বৃদ্ধাশ্রমে থাকব।’
-‘হোয়াট?’ আঁতকে উঠল দুজনেই।
-‘ঠিকই শুনেছো। ওখানে অনেক বন্ধু পাবো। আমার স্কুলের এক বান্ধবীও ওখানে আছে। ওকে অবশ্য ওর ছেলেই রেখে এসেছে।’
-‘ মা, প্লিজ। বাবা সবে দু’মাস হল চলে গেছেন। তুমি আমাদের ছেড়ে অন্য জায়গায় থাকবে? আর তাছাড়া এখানে কি  অসুবিধে তোমার?’ ঋকের গলা চড়ছে।
সুমি তাকে থামায়। ‘মা, তোমার একা লাগলে আমি না হয় চাকরিটা ছেড়ে…’
না। সেসবে মোটেই আমল দেননি উপমা। জোর করে চলে এসেছিলেন ভরসাকে ভরসা করেই।
সুমি নিয়মিত আসলেও ছেলেটা কিছুতেই আসেনি মাকে দেখতে।
উপমারও জেদ। তিনি বৃদ্ধাশ্রমেই থাকবেন৷ আগে অবশ্য বলেছিলেন তিনি যে মাঝে মাঝেই বাড়ি আসবেন দিনকয়েক ঘুরে যাবেন। কিন্তু ছেলের আর তার মাঝখানে যে অভিমানের পাহাড় জমেছে তা কেটে বাড়ি যাওয়ার টানেলটা এখনো তৈরি করতে পারেনি সুমি।

***

-‘বৌমা তোমার খুব ভাল গো উপমা দি।’
-‘তা যা বলেছিস। নিজের মেয়ের থেকেও বেশি। তবে ছেলেটার অভিমান ভাঙলে… ওকে দেখতে যে বড়…’ দীর্ঘশ্বাস পড়ে উপমার।

ভরসার কথা তিনি বাল্যবান্ধবী দেবকি র কাছেই শুনেছিলেন। দেবকি র দুই ছেলে, দুই বৌমা, নাতনী নিয়ে ভরা সংসার। কিন্তু স্বামী গত হলেন। গত হওয়ার উপক্রম হল ভাইদের সম্পর্ক। দ্বন্দ্ব বাঁধলো কে মাকে রাখবে। কতদিন রাখবে। শেষে ছোটবৌমাই সমাধান দিল ভরসায় রেখে আসবার।
তখন অবশ্য প্রায়ই আসত পালা করে দেখতে। কিন্তু এখন সেই পালা করা নিয়েও নিক্তি ওজনে পাল্লা উঁচুনিচু হতে লাগল। তাই তাদের আর আসা হয় না।
এমন আছে অনেকেই।

কেউ আবার অবিবাহিত। যেমন প্রবুদ্ধ বাবু, অরুণাদি, সোহম বাবু। বয়স হয়েছে। আপনজনেরা বেশিরভাগই চোখ বুজেছেন। নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভরসার হাতে নিজেকে সঁপে দেওয়ার।

‘ভরসা’ বৃদ্ধাশ্রমটা কলকাতা থেকে ষাট কিলোমিটার মত দূরত্বে। জায়গাটার নামটা ভারি মিষ্টি। কাব্যিনগর। সেখানে বৃদ্ধবৃদ্ধারা থাকেন বেশ আনন্দেই৷ সুগন্ধার মা যোজনগন্ধা মিত্র এটির কর্ণধার। পরিবার ছেড়ে এসেও যেন সবাই একটা নতুন পরিবার পায় সেদিকে সবসময় খেয়াল রাখেন তিনি।
ভরসার আবাসিকদের ভরসা কিন্তু ফুলি, দুব্বা আর রতন। মায়ে ঝেঁটানো বাপে খেদানো এই তিনজনকেও ভরসাতে আশ্রয় দিয়েছেন যোজনগন্ধা।

আবাসিকদের জন্য বেশ কিছু ঘর আছে সিংগল্‌ সিটেড,আবার কিছু আছে ডবল সিটেড৷ যে যার পছন্দমতো ঘর বেছে নেন। তাছাড়া প্রয়োজনীয় ও নিয়মিত চিকিৎসারও সুবন্দোবস্ত রয়েছে।

ফুলিরা সমস্ত কাজ করলেও রান্নাঘরে কিংবা বাগানের কাজে হাত লাগান আবাসিকরাও। অনেকে আবার সেলাই জানেন। তারাই অন্যদের শেখান। একদিন করে ক্লাস হয় সেলাইয়ের। এই বুড়ো বয়সে এইসব ক্লাস করতে গিয়ে তো বুড়োবুড়িদের হাসি আর থামেনা। যোজনগন্ধা তো এই হাসিটাই চান।
এবার তিনি স্থির করেছেন একটা পত্রিকা করাবেন এঁদের দিয়ে।

প্রতিবছর সবাই মিলে বেড়াতেও যান।

আর নিত্যকার কার্যাবলী বাঁধাধরা হলেও হাসি গল্পে কিংবা লাইব্রেরির বই পড়ে কারুর একঘেয়ে লাগে না সেখানে।

তবু কোথায় যেন বাজে। বুকের বাঁদিকটা চিনচিনিয়ে ওঠে সিরিয়ালের নায়িকাদের শাশুড়ির প্রতি যত্ন দেখে।

***

‘ঋক, এবার কিন্তু তুমি জেদটা ভাঙো। বছর পেরিয়ে গেল। তুমি মাকে দেখোনি। মায়ের কথাটা ভাবো একবার। যতই হোক আমি কিন্তু তাঁর বৌমা। ছেলের জায়গাটা আলাদা ঋক। মা আবাসনের বার্ষিক অনুষ্ঠান কমিটির সেক্রেটারি এবার৷ একবার দেখবে না?’
অনেক বোঝালেও ঋকের জেদ ভাঙাতে পারেনি সুমি। অগত্যা ভরসাতে সে একাই যাবে স্থির হল।

রোববার সকাল থেকে একটাও কথা বলেনি ঋক। সুমিও ঘাঁটায়নি। ও বোঝে মা ছেলের অভিমান।
সারাদিন ল্যাপটপ খুলে থাকলেও একটাও কাজ করেনি ঋক। শুধু ঘুরেফিরে এসেছে ছেলেবেলা- ও- বাবা-মা। ঘুরেফিরে একটা শক্তমতো পুঁটলি এসেছে গলার কাছটায়।

সব বন্ধুরা ঋকের মাকে প্রশংসা করত। তাদের মাকে উপমার মতো হতে বলত। আসলে উপমা বরাবর খুব আধুনিকা। না না। সাজপোশাকে নয়। মনের দিক থেকে। চিন্তাভাবনায়। তিনি যেমন কোনোদিন ছেলের নিজস্ব বৃত্তে ঢুকে তাকে বিব্রত করেননি, ঠিক তেমনি এমনভাবে নিজের ব্যক্তিত্ব জারি করেছেন যে, ঋকের কখনো অন্যায় কাজ করার সাহসও হয়নি। আসলে বয়সোচিত মননশীলতাকে তিনি বুঝতেন বরাবর।
তাই বোধহয় সুমির সাথে বন্ডিংটা তৈরি হতে এতটুকু অসুবিধে হয়নি। হয়নি শাশুড়ি বৌমার পার্পিচুয়াল স্ট্রাগল।

ছোট থেকেই কোনোদিন মাকে ছেড়ে থাকেনি ঋক। কিন্তু তাই বলে মাম্মা’স বয় করেও রাখেননি তাকে উপমা। যথেষ্ট স্বাবলম্বী হয়ে গেছে সে ছোট থেকেই। কিন্তু হঠাৎ করে মা যে বাড়ি ছেড়ে চলে যাবেন এটা মেনে নিতে পারেনি ঋক আজও।

মা বরাবর ভীষণ পজিটিভ। মনে পড়ল ঋকের পরীক্ষার দিনগুলোর কথা। ওর বন্ধুরা পরীক্ষা দিয়ে বেরোবার পরেই তাদের মায়েরা প্রশ্নপত্র মধ্যপংক্তি ফেঁড়ে ফেলতেন, কতটুকু ছেলে লিখতে পেরেছে বা পারেনি তাই নিয়ে।  কিন্তু উপমা একদম দলছুট। তাঁর অকাট্য যুক্তি, সামনের দিকে তাকাও বাবু। এখন আগে কি পারোনি সেই নিয়ে কেঁদে পরেরটা নষ্ট কোরো না।
ঋকের এত আনন্দ হত তখন, যে বলার নয়। বন্ধুরা বলত, ঋক’স মম ইজ সো কুল।
একবার তো পপিন্স ওর মাকে বলেই দিয়েছিল মার খেতে খেতে, ‘ঋকের মায়ের কাছে তোমাদের ট্রেনিং নেওয়া উচিত।’
ক্লাস এইটের ছেলের মুখে এত বড় কথাটার ফলে তাকে সারারাত খেতে দেননি ওর মা।
আজ সারাদিন এসবই ফিরে ফিরে আসছে ঋকের মনে।

একবার হঠাৎ ঋক বায়না ধরল বাবার মত সে সিগারেট খাবে। তখন বোধহয় ওর ক্লাস টু। প্রথমে তো মা বাবার সে কি হাসি। ঋক খুব অপমানিত বোধ করল। চোখে জল এসে গিয়েছিল ওর৷ মা বুঝতে পেরে পরিস্থিতি সামলেছিল।
‘আচ্ছা বাবু, তোকে আমি দেব সিগারেট। কিন্তু দেখ, বাবা সিগারেট খান, তেমন বাবা অফিসেও যান। তুমি কি অফিসের কাজ সামলাতে পারবে? অফিসে গেলে তবেই সিগারেট খাওয়া যায় তো!’
ঋক দমে গেল একদম। সে তো এখন ছোট। স্কুলের পড়া করে অফিসের কাজ সামলাবে কিকরে? স্কুলে না গেলে মিস খুব বকবেন। তখন ঋক মুলতুবি রাখল সিগারেট খাওয়া।


***

সুমি আগেই দেখা করে এল উপমার সাথে।
-‘বাবু আসেনি, নারে?’
-‘মা, আমি তো বলেছিলাম। তুমি তো জানো তোমার ছেলেকে।’ খুব লজ্জিত হয়ে বলল সুমি।
-‘দেখ সুমি, তুই লজ্জা পাচ্ছিস কেন? লজ্জা তো আমার। আমি ছেলেকে মানুষ করতে পারিনি। তার জেদ নমনীয় হতে শেখাতে পারিনি। আর তোকে নিয়ে আমার গর্ব রে মা।আর একটা ব্যাপারে বাবুকে নিয়ে আমার গর্ব। আমার বাবু মানুষ চিনতে ভুল করেনি। তোকে নিয়ে এসেছে।’
চোখের কোণ চিকচিকিয়ে সুমি বসল দর্শকাসনে।
যোজনগন্ধা, সুগন্ধা, সবার হাত ঘুরে মাইক এল আবাসিকদের হাতে। আজ সকলে বৃদ্ধাশ্রমে থাকা নিয়ে তাদের অনুভূতি উচ্চারণ করবে সবার সামনে।
রমলা দেবী তো বলতে গিয়ে কেঁদেকেটে একসা। তার মেয়ে জোর করে রেখে গেছে। আসেও না দেখতে।
বাসন্তীমাসিমা এখানে খুব ভাল আছেন, কিন্তু বৃদ্ধাশ্রমে থাকাটা তিনি মোটেই ভাল চোখে দেখেন না। মনে করেন ছেলেমেয়েরা কর্তব্য এড়াচ্ছে। ভাগ্যিস তাঁর ছেলে তখনো এসে পৌঁছয়নি।

সবার শেষেই উপমার পালা, কারণ তিনিই অর্গানাইজার।
সুমির চোখ অলরেডি তখন ভিজে অন্যদের ব্যাথায়।

একগাল হেসে শুরু করলেন উপমা।
‘আজকের টপিকটা সবার কাছেই বড্ড টাচি। আমার বন্ধু বা পরিজনদের সকলেরই বলতে গিয়ে মুখ ভার। দর্শকদেরও চোখ লাল, কিংবা কেউ কেউ বুঝি অপ্রস্তুত।  অথচ সবাই একথাও বলছে যে ভরসায় আমরা সবাই খুব ভাল আছি। তাহলে এত মেঘ কেন মনে?
আসলে আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে একটা ধারণা উপ্ত হয়ে গেছে, যে, বৃদ্ধাশ্রম মানেই অসম্মান, অবহেলা। বৃদ্ধাশ্রমে বাবা মাকে রাখতে চাইলেই ছেলেমেয়েরা ভিলেন। আর বৃদ্ধদের মন খারাপ।

এই যে আমি জোর করে নিজের ইচ্ছেতে বৃদ্ধাশ্রমে এসেছি, তাতে আমার ছেলে অভিমান করেছে। আমি জানি সে মনে মনে ভাবে আমি বোধহয় তাদের ওপর বিরক্ত হয়ে চলে এসেছি। আবার অনেকের ছেলেমেয়েরা রেখে গেছে তাদের অমতে। সেক্ষেত্রে তাদের মনে জমাট বেঁধেছে বিরক্তি।
কিন্তু কেন? আমরা কি একটু অন্যভাবে ভাবতে পারিনা?’

সবার মুখেই জিজ্ঞাসা।

একটু থেমে আবার শুরু করলেন উপমা।
‘বাচ্চারা যখন সবে হেঁটে চলে আধো আধো কথা বলতে শেখে তখন থেকেই বাবা মায়েরা চান তাদের প্লে স্কুলে দিতে। কারণ তারা সমবয়সী পাঁচজনের সাথে মিশতে পারবে৷ পিয়ার গ্রুপ পাবে। কথাটা তো সত্যিই। এখন বাবা মায়েরা অনেকেই দুজনেই চাকরি করেন। আর না করলেও সিংগল্‌ চাইল্ড এর ট্রেন্ড-এ তারা বড্ড একলা হয়ে পড়ে।
সেক্ষেত্রে স্কুলে গেলে মিশতে শেখে, একাকি ত্ব কাটে।
ঠিক তেমনি আমরা যখন বুড়ো হয়ে যাই তখনও আমাদের বেশ একা লাগে। আর জোড়ের পায়রার একজন চলে গেলে তো সেটা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। আমরা বেশিরভাগই বিরক্ত হই এটা ভেবে যে, ছেলেমেয়েরা বড্ড ব্যস্ত। আমাদের সময় দেয় না। বলুন তো, ওরা সময় দিতে গেলে ওদের কাজকর্ম এগোবে?
আমরাই কিন্তু চেয়েছি ওরা পড়াশুনো করে অনেক বড় চাকরি করুক৷ হয়ে উঠুক টাকা রোজগারের কল। ওরা তাইই হয়েছে। আমাদের স্বপ্ন পূরণ করেছে। এখন সেই স্বপ্ন পূরণ করতে গেলে আমাদের সময় দেবে কি করে তারা? এই ইঁদুর দৌড়ের যুগে তা কি সম্ভব?
আমরা জানি তা সম্ভব নয়। আবার ঠিক তেমনই একলা থাকতে আমাদেরও ভাল লাগবে না এটাও ধ্রুব সত্য। একা অলসতায় মনে জং ধরে। আর জং অতি ভয়ানক, বিষাক্ত৷ মনের জংও তেমনি নানা কুচিন্তা ছড়ায়। ছড়ায় ভয়। আমরা হয়ে যাই খিটখিটে, অসুস্থ। তখনি ব্যস্ততার সাথে সংঘর্ষ বাধে আলস্যের।

কিন্তু আমরা যদি সেই একাকিত্ব নিয়ে না কেঁদে বৃদ্ধাশ্রমে চলে আসি? ভেবে দেখলে দেখা যাবে, অতি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ আমরা পাবো। ঠিক আমাদের সমবয়সী অনেক বন্ধু পাবো। সারাদিন একাকিত্ব আমাদের গ্রাস করবে না। আমরা মাঝেমাঝে বাড়ি যাব, তারা আসবে। তাতে টান কিন্তু কমবে না। তাহলে আমরা কেন বৃদ্ধাশ্রমকে ইতিবাচকভাবে দেখব না?

এই যে আমার ছেলে বা বৌমা আমাকে ছাড়তে চায়নি। আমি তাদের দোষ দিই না। তারা তো বৃত্তের বাইরে নয়। তারা তাদের উপযুক্ত কাজটাই করেছে। আমার সুমিমা তো চাকরি পর্যন্ত ছাড়তে চেয়েছে আমাকে সময় দেবে বলে। কিন্তু আমি রাজি হইনি। একজন বৃদ্ধার কাছে সারাদিন বসে থেকে নিজের স্কিলে মরচে পড়াবে কেন একজন?
আর একথাও কি ঠিক নয়, যে আমি আজ আমার অর্ধেক বয়সী কারুর সাথে নিত্যদিন গল্প করে যে আনন্দ পাব, তার চেয়েও সমবয়সী বন্ধুর সাথে আমার মনকে খুলতে পারব অনেক বেশি,  সেও আমাকে বুঝতে পারবে আরো ভাল করে?

তাই আমার আবেদন গোটা সমাজের কাছে, বৃদ্ধাশ্রমে থাকা মানেই অবহেলা, কষ্ট বা অসম্মান – এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসুন। বৃদ্ধাশ্রমকে অন্তর দিয়ে গ্রহণ করুন। দেখবেন আমরা সবাই খুব ভাল থাকব, ভাল রাখব।

কিরে বাবু, আর রাগ নেই তো? আমি জানতাম আজ তুই আসবিই।’
পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা ঋককে উদ্দেশ্য করে বললেন উপমা।

9 thoughts on “আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম

  • October 15, 2019 at 10:25 am
    Permalink

    বাহ্! সুন্দর। Positive মানসিকতা থাকলে অনেক সমস্যাই সমাধান সম্ভব ।

    Reply
    • October 27, 2019 at 12:55 pm
      Permalink

      আমার দুঃখের দিনেও মূলমন্ত্র হল ঃঃ
      “মনেরে আজ কহ যে
      ভাল মন্দ যাহাই আসুক
      সত্যেরে লও সহজে”

      Reply
  • October 15, 2019 at 1:50 pm
    Permalink

    খুব ভাল।লিখতে থাক শারদীয়া।

    Reply
    • October 23, 2019 at 10:13 am
      Permalink

      ভালো লাগল। সিগারেট এপিসোড টা বেশ ! উপমা দেবীতে তোর ছায়াই দেখতে পেলাম।
      আগেও পড়েছি, আরও পড়তে চাই তোর লেখা।

      Reply
      • October 27, 2019 at 12:51 pm
        Permalink

        ভালবাসা নিও। সাহস দিও আর।

        Reply
    • October 27, 2019 at 12:54 pm
      Permalink

      ভালবাসা।

      Reply
  • October 15, 2019 at 6:32 pm
    Permalink

    অসাধারণ একটা লেখা লিখলেন শারদীয়া। জানতাম না আপনার এই গদ‍্যরচনার দক্ষতার কথা। বড় ভালো লাগলো।
    যদিও অধিকাংশ বৃদ্ধ বৃদ্ধার বৃদ্ধাশ্রমে ঠাঁই হয় অবহেলাজনিত কারনেই। , তবু ব‍্যতিক্রমী ভাবনা মনকে নাড়া দেয় বৈকি। লেখায় এগিয়ে চলুন।

    Reply
    • October 27, 2019 at 12:50 pm
      Permalink

      ধন্যবাদ অসংখ্য। ভাল থাকবেন।

      Reply
    • October 27, 2019 at 12:53 pm
      Permalink

      ধন্যবাদ বন্ধু। অকৃপণ শুভেচ্ছা জানবেন।সাহস বাড়ছে আপনাদের প্রশ্রয়ে।

      Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 + nine =