স্বপ্নের সাথী, স্বপ্নের রোশনাই
মনিদীপা দত্ত ##
গতবছর দীপাবলী উপলক্ষে এক প্রিন্টার কোম্পানির সুন্দর একটা বিজ্ঞাপন চোখে পড়েছিল।যার শিরোনাম ছিল “উম্মিদ কি দিয়া”। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছিল উৎসব তখনই পূর্ণতা লাভ করে যখন সেই উৎসবের আলো প্রতিটা মানুষের চোখের তারায় প্রতিফলিত হয়। এবছর ‘স্বপ্নের সাথী’র সৌজন্যে এরকমই এক কাজের সাক্ষী হলাম।
দীপাবলির দিন অর্থাৎ গত 28 শে অক্টোবর বন্ধু শুভজিৎ এর আহ্বানে এসেছিলাম আহিরীটোলার বেনিয়াটোলা ঘাটে। যেখানে প্রতিবছরের মত এবারেও স্বপ্নের সাথীর পক্ষে আয়োজন করা হয়েছিল এক দীপাবলী উৎসবের, যার মূলে ছিল পথের মাঝে ফুটে থাকা কিছু চেনা-অচেনা অনামিকা শিশুর দল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নিজেই নিজেকে বলেছিলাম ভাগ্যিস এসেছিলাম। না এলে তো বুঝতামই না আনন্দ কতটা নির্ভেজাল হতে পারে, হতে পারে কতটা আন্তরিক। আমরা হয়তো প্রতি উৎসবের সম্পদ লাভ করি অঢেল কিন্তু কোনো উৎসবেই অপার আনন্দে মেতে উঠি না।
বিকেল থেকেই সামান্য ফুল ও প্রদীপ দিয়ে গঙ্গার ঘাটের একটা অংশ সাজিয়ে তোলা হয়েছিল।সন্ধ্যে হতেই ঘাটের পুরো আলোকসজ্জা যখন প্রজ্জ্বলিত হয়ে উঠলো তখন পুরো পরিবেশটাই এক অন্য রূপে ফুটে উঠল। এরপর বিনোদ, শুভম, দীপ, মানসি, অঙ্কিতাদের মত ছোট ছোট দেবশিশুরা যখন স্বপ্নের সাথীর উদ্যোগে বাজির আনন্দে মেতে উঠলো, তখন তাদের দেখে মনে হচ্ছিল চলন্ত বাতিস্তম্ভ, যাদের প্রতিটি অঙ্গের রোমকূপ থেকে ছিটকে বেরোচ্ছে নক্ষত্রজ্যোতি।
রং মশালের লাল আলোয় তাদের উছ্বাস,আনন্দের প্রতিফলন স্বচক্ষে দেখতে পাচ্ছিলাম তাদের দুচোখে।এই মুহুর্ত প্রাপ্তিসুখের জন্য চিরকৃতজ্ঞ থাকব স্বপ্নের সাথীর কাছে।এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন পুরপিতা শ্রী অজয় সাহা ও সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। যাদের উপস্থিতি এই অনুষ্ঠানের ঔজ্জ্বল্য অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছিল।
আনন্দ-হুল্লোড়, বাজি পোড়ানো, মিষ্টিমুখের শেষে বিদায়লগ্নে উষ্ণ আলিঙ্গন সেরে যখন বাড়ি ফিরছিলাম তখন যেন ওই ঘোর অমাবস্যাতেও আমার চেনা শহরটাকে অনেক বেশি উজ্জ্বল আলোকিত মনে হচ্ছিল। উপলব্ধি করছিলাম ‘স্বপ্নের সাথী’ শুধু একটি সংস্থা নয়, তারা বাস্তবিকই স্বপ্নের ফেরিওয়ালা। সমাজ যাদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে বাধা দেয়, ওরা তাদের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করে। ভাল থাকুক ‘স্বপ্নের সাথী’। বৃহৎ থেকে বৃহৎতর হোক ওদের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার পরিধি।