জলসাঘর

শুভাশিস সিংহরায়

ঠিক পিচরাস্তার ধারেই একরাশ
একাকীত্ব নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো
বাড়িটা,আর প্রতি বছর পৌষসংক্রান্তিতে
হাজির হোত এক পরিযায়ী হাতি আর
দুট মাহুত…সেই থেকে বাড়িটার সামনে
টোটো আর বাসের স্টপেজ হল ‘হাতিবাড়ি’।
দিনভর মাধুকরী শেষে বাড়ির ঠিক নীচেই
জানলা দরজাহীন একটা অসমাপ্ত ঘরে
তারা খুঁজে নিত রাত্রিবাস আর হাতিটা বাঁধা
থাকত সামনের একখণ্ড সবুজ প্রান্তরে…
উত্তরের বারান্দায় বসে পড়ন্ত বিকেলে দেখে
যেতাম হাতিকে ঘিরে কেমন জমে উঠছে
নাগরিক বিস্ময়
-আমজনতার চোখে স্বপ্নের মোহিনী বিভ্রম
রাত গভীর হলে মানুষগুল চলে যেতে ঘুমের
দেশে.. আর জ্যোৎস্নাপ্লাবিত প্রান্তরে শুধু জেগে
থাকত এক প্রবল অস্তিত্ব… শুঁড়ের ধুলিকণায়
ক্রমাগত ভিজে যাচ্ছে বিশাল শরীর…ভিজে
যাচ্ছে জনপদ… ভিজে যাচ্ছে জ্যোৎস্নার অলিন্দ
কয়েকটা অপরিচিত প্যাঁচার সাবলীল উড়ান

প্রতিটা জীবনেরই হয়ত নিভৃতে লালিত কোন
জলসাঘর থাকে …
দমকা হাওয়ায় বারান্দায় কেঁপে ওঠে বাতিদান-
কেঁপে ওঠে বেলোয়ারী ঝাড় আর আমি
শশব্যাস্ত হয়ে সৌখীন ছড়িতে ক্রমাগত ছাড়িয়ে যাই
স্মৃতির মুখে জমে থাকা মাকড়সার জাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven − 4 =