যৌনতার গ্রাম
কোনো গ্রামবাসির আয়ের প্রধান উৎস যৌনবৃত্তি! তাও একটি দুটি নয়, পুরো তিন গ্রামের মানুষের আয়ের প্রধান মাধ্যম যৌন ব্যবসা! এমন খবর রীতিমতো অবাক করার। আমাদের দেশে এমন তিনটি গ্রামের সন্ধান পাওয়া গেছে।
সমাজ কিংবা সংস্কৃতি যে কারণেই হোক বিশ্বের অনেক জায়গা রয়েছে, যেখানে পতিতাবৃত্তিই আয়ের মূল উৎস। এই অবস্থা থেকে পিছিয়ে নেই ভারতও। পতিতাবৃত্তি নতুন কোনো ঘটনা নয়। বাংলাদেশ, পাকিস্তানের মতো মুসলিম প্রধান দেশেও যৌন ব্যবসা বা পতিতাবৃত্তি হচ্ছে।
এছাড়া বিশ্বের প্রায় সব দেশেই প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে যৌন ব্যবসা চলছে। কিন্তু এ দেশে বেশ কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে পতিতাবৃত্তিই আয়ের প্রধান উৎস।
অন্যতম গ্রাম নাতপুরা, উত্তরপ্রদেশ। উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনৌ থেকে মাত্র সত্তর কিলোমিটার দূরে হারদোইয়ের কাছে নাতপুরা গ্রাম। হাজার পাঁচেক মানুষের বাস এই গ্রামে। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি যে নাতপুরার বাসিন্দাদের আয়ের মূল উৎস পতিতাবৃত্তি। গত চারশো বছর ধরে পরম্পরাগতভাবে পতিতাবৃত্তিকেই বেছে নিয়েছেন তারা। এখনও তা সমান ভাবে চলে আসছে। গ্রামের মধ্যে থেকে তো বটেই, গ্রামের মেয়েরা এখন এই পেশা নিয়ে মুম্বই এমনকি দুবাই পর্যন্ত চলে যাচ্ছেন বলে খবর। গ্রামের পুরুষরা এ কাজে মেয়েদের সক্রিয় সহযোগিতা করেন। কোন কোন ক্ষেত্রে বলপ্রয়োগও করে থাকেন।
কর্নাটকের দেবদাসিসের মেয়েদেরকে দেবীর সঙ্গে বিয়ে দেয়া হয়৷ এরপর তাদের কুমারিত্বকে নিলামে তোলা হয়। এরপর থেকে সারাজীবন তাদেরকে পতিতা হয়েই কাটাতে হয়। তাদেরও আয়ের মূল উৎস এই পতিতাবৃত্তি।
উত্তর গুজরাটের বনসকান্থা জেলায় অবস্থিত ওয়াদিয়া গ্রাম। পরিবারকে চালানোর জন্য এ গ্রামের নারীরা পতিতাবৃত্তি করেন। পতিতাবৃত্তিতে নিয়োজিত নারীদের দালাল হিসেবে কাজ করে এ গ্রামের পুরুষরা। এ গ্রামের লোকদেরও আয়ের প্রধান উৎস পতিতাবৃত্তি। এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ন্যায় পুরো ভারত জুড়েই পতিতাদের বিচরণ রয়েছে।
একটি এনজিও এই অঞ্চলে ভ্রষ্টাচারী গোত্রের শিক্ষা ও কল্যাণে উন্নতি সাধন করেছে, সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে পতিতাবৃত্তির চক্র ভেঙে যাওয়ার একমাত্র পথ হিসেবে মেয়েদের বিয়ে দেবে তারা। সেই উদ্দেশ্যে ২০১২ সালে মার্চ মাসে একটি গণ-বিবাহ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। যাতে আট জন যুবক এবং ১২ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে মেয়েরা অংশ নিয়ে ছিল। এদের মধ্যে কয়েকজন দম্পতি গ্রামে নিয়মিত যৌনকর্মী ছিলেন। তবে বেশিরভাগ মহিলাদের, এখনও যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতে হয় এখানে। <br />জানা গেছে, অর্থনৈতিক অভাব-অনাটনের কারণেই বেশিরভাগ তরুণিরা এ পেশায় এসেছেন। কেউ আবার প্রতারণার শিকার হয়ে জড়িয়ে পড়েছেন যৌন ব্যবসায়। চেষ্টা চলছে, কিছু শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ বা গোষ্ঠী তাদের মত করেই লড়াই চালাচ্ছেন এর বিরুদ্ধে। প্রচার চালাচ্ছেন সচেতন করতে তবে তা যে সময় সাপেক্ষ তা মেনে নিচ্ছেন তারাও।