উপকারী চা

চা ছাড়া বাঙালি? ভাবাটাই বেশ কষ্টকর। বাঙালির আপ্যায়নের বিশেষ উপকরণ হচ্ছে চা। আর চা ছাড়া দিনটি শুরু করবার কথা অনেকেই ভাবতেই পারেন না। বাড়ি, অফিস এবং যে কোনও আড্ডায় চা চাইই চাই।  যে চা আমরা পান করি, তা কিন্তু একটি উদ্ভিদ থেকে আসে। যার বৈজ্ঞানিক নাম হলো ক্যামেলিয়া সাইনেসিস। বিভিন্ন এলাকার চায়ের নিজস্ব স্বাদ ও গন্ধ থাকলেও, স্বাস্থ্যগত উপকার কিন্তু একেক ধরনের। চায়ে রয়েছে অনেক বেশি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। যা হৃদরোগ কমাতে যথেষ্ট সহায়ক। শুধু কি তাই? চা রক্তজমাট বাঁধতে বাধা দেয়। চায়ে রয়েছে পটাশিয়াম আর জিঙ্ক।

করোনাকালে চায়ের কদরও বেশ বেড়েছে। এবার আসা যাক বিভিন্ন ধরনের চা তৈরির উপকরণের বিষয়।

তুলসী ও মধুর চা : 

চা পাতা এক চামচ এবং টি-ব্যাগ একটা। তুলসী পাতা ১০ থেকে ১২টা। লেবুর রস পরিমাণ মত, যেন স্বাদ পাওয়া যায়। মধু পরিমিত। জল ৫০০ মিলিমিটার। ফুটন্ত জলতে তুলসী পাতা দিয়ে পাঁচ মিনিট ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর চা পাতা দিয়ে আরও কয়েক মিনিট ফুটাতে হবে। এরপর ছেঁকে নিজের মতো করে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে পান করুন।



কাল জিরে ও গোলমরিচের চা : 

চা পাতা দুই চামচ, কাল জিরে আধা চা চামচ, আস্ত গোলমরিচ আধা চামচ, আদা কুঁচি এক চামচের কিছু অংশ, চিনি কিংবা মধু নিজের মতো করে। আর জল ৫০০ মিলিমিটার। জল ফুটিয়ে চা, কাল জিরে, আস্ত গোলমরিচ আর আদা কুঁচি দিয়ে ফোটাতে হবে। এরপর ছেকে চিনি কিংবা মধু মিশিয়ে গরম গরম চা পান করুন।

মাল্টা ও কাঁচা লংকার চা : 

চা পাতা আধা চামচ, মাল্টা একটা, কাঁচা লংকা একটা আর জল ৫০০ মিলিমিটার। চায়ের মধ্যে ইচ্ছেমতো চিনি কিংবা মধু নিতে পারেন। পাত্রে জল ফুটিয়ে এর মধ্যে চা পাতা ও কাঁচালংকা কুচি দিয়ে কয়েক মিনিট ফোটাতে হবে। উনুন থেকে নামিয়ে মাল্টার রস ও পাতলা গোল করে কাটা মাল্টা দিন। চামচ দিয়ে কিন্তু মেশাতে হবে। ঝাল খেতে না চাইলে কাঁচালংকা বাদ দেওয়া যেতে পারে।


লবঙ্গ চা : 

চা পাতা আধা চামচ, লবঙ্গ ১৫টি, চিনি কিংবা মধু ইচ্ছেমতো। আর জল ৭০০ মিলিমটার। জল ফুটলে তাতে লবঙ্গ দিয়ে মাঝারি আঁচে ১০ মিনিট ফোটাতে হবে। নিদিষ্ট সময়ের পর চা পাতা দিয়ে কমপক্ষে ৭ মিনিট জ্বাল দিতে হবে। ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে ইচ্ছেমতো চিনি কিংবা মধু মিশিয়ে গরম চা পান করুন।

এ ছাড়াও রয়েছে হরেক রকম চা। যা বিদেশে খুবই জনপ্রিয়। এর মধ্যে রয়েছে- হোয়াইট টি, হারবাল টি, ওলং টি, ব্ল্যাক টি, গ্রিন টি। আমাদের দেশে এখন গ্রিন টি-র বেশ প্রচলন রয়েছে। ইতিমধ্যে অনেকের মতে এই চা পান করার ব্যাপারে আগ্রহ বাড়ছে। গ্রিন টি ত্বক পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে। শুধু তাই নয়, এটি হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক। এর পাশাপাশি দাঁতের ক্ষয়, মাড়ি মজবুত করতে এই চায়ের জুড়ি নেই বলে জানিয়েছেন দন্ত বিশেষজ্ঞরা। ব্ল্যাক টি নিয়মিত পান করলে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তবে এই চা খেতে হবে দুধ ছাড়া। হারবাল টি তো ভেষজ উপাদানে মিশ্রিত। এটি স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × two =