কেশরে হাসছে কাশ্মীর
রূপে কাশ্মীরের তুলনা সে নিজেই, কিন্তু বছরের এই সময়ে বেগুনী সৌন্দর্যে ভূস্বর্গ হয়ে ওঠে আরও অনন্য, অসাধারণ। উপত্যকার এই সৌন্দর্য যেন দেশের সমস্ত সমস্যার কথা ভুলিয়ে দেয়। করোনার এই আবহেও কাশ্মীরের চাষীরা কিছুটা আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন কেশর চাষের মাধ্যমে।
মনে করা হয় ইরান হল জাফরান বা কেশরের এর আদিভূমি। আবার অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন স্পেন হল জাফরান এর আদি ভূমি। করকাস স্যাটিভাস বা স্যাফরন স্যাটিভাস উদ্ভিদের ফুলের কেশর শুকিয়ে জাফরান তৈরি হয়। আগষ্ট মাসে চারা রোপন করা হয় এবং অক্টোবর – নভেম্বর মাসে ফুল তোলা শুরু হয়। হালকা বেগুনি রঙের হয় সেই ফুল। তা থেকে স্টিগমা বের করা হয়।
সাধারনত ১ গ্রাম শুষ্ক কেশর প্রস্তুত করতে ১৫০ থেকে ১৬০ টি ফুল প্রয়োজন হয়। ১ লাখ ৬০ হাজার থেকে তিন লাখ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হয় এই কেশর। তাই এই কেশরকে পৃথিবীর সব থেকে দামি মশলা বলা হয়।
দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার পাম্পোর শহর কেশর শহর হিসাবে পরিচিত। শ্রীনগর থেকে ১৮ কিমি দূরে জম্মু-কাশ্মীর মহাসড়কের ধারে অবস্থিত এই শহরেই উচ্চ মানের কেশর মেলে। এই এলাকার কৃষকেরা এখন ফুল থেকে কেশর আলাদা করার পর তা বিকিকিনিতে ব্যস্ত। পাম্পোর ছাড়াও কিস্তবাড় জেলাতেও কেশরের চাষ হয়। এই বছর ৩ হাজার ৭১৫ হেক্টর জমিতে কেশরের চাষ হয়েছে।
ভারত জাফরান উৎপাদনে সারা পৃথিবীতে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। আগে শুধুমাত্র জম্মুও কাশ্মীর অঞ্চলে এর চাষ হতো, বর্তমানে হিমাচল প্রদেশেও অল্প পরিমানে চাষ হয়। ভারতে মোট ৫৭০৭ হেক্টর জমিতে জাফরান চাষ হয়। জম্মু ও কাশ্মীরে ই প্রায় ৪৪৯৬ হেক্টর জমিতে জাফরান চাষ করা হয়। বেশ দামী হওয়ায় জাফরানকে বলা হয় “রেড গোল্ড”। এ বছরে কেশরের উৎপাদন ভালই, তাই করোনাকালে এ থেকেই কিছুটা লাভের মুখ দেখছেন কৃষকেরা।