গোবরডাঙ্গা নকসার উদ্যোগঃ আলাপে সংলাপে-দুই বাংলা

 সৃজিতা চক্রবর্তী ##

উদ্দেশ্য ছিল দুই বাংলার থিয়েটারের আনাচে কানাচে উঁকি দিয়ে দেখা এবং সেখান থেকেই বিষয় কুড়িয়ে ঘরোয়া আড্ডার মাধ্যমে আলোচনা করা। এই প্রয়াসকে সফল রূপ দিতে  গোবরডাঙ্গা নকসা ১০ জুলাই আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ গ্রূপ থিয়েটার ফেডারেশন ও গোবরডাঙ্গা নকসার থিয়েটার আড্ডা। যেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন দুই বাংলার বিশিষ্ট নাট্যজনরা।

বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন থেকে উপস্থিত ছিলেন শাহাদাৎ হোসেন খান হীলু (সভাপতিমন্ডলীর সদস্য), তৌফিক হাসান ময়না (সাধারণ সম্পাদক,  বাংলাদেশ গ্রাম), রফিক উল্লাহ সেলিম (সম্পাদক, অর্থ), খন্দকার শাহ আলম(সম্পাদক, অনুষ্ঠান), আবদুল হালিম আজিজ (সম্পাদক, তথ্য ও গবেষণা), খোরশেদুল আলম (সম্পাদক, দফতর) প্রমুখ নাট্যজন।

এপার বাংলা থেকে গোবরডাঙ্গা নকসার প্রান পুরুষ আশিস দাস, সম্পাদক দীপান্বিতা বনিক দাস সহ অন্যান্য সদস্যদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নাটকের মানুষজন। দুলাল চক্রবর্তী(ফারাক্কা),  শুভেন্দু ভাণ্ডারী(আমতা পরিচয়, হাওড়া),  সোমনাথ পাল(কথক পারফর্মিং রিপোর্টি, হাওড়া),  প্রভাত কুমার দত্ত(রূপান্তর), সঞ্জীব সাহা(চাকদা নাট্যজন), রতন চক্রবর্তী(রংতাল থিয়েটার, হালিশহর),  গৌরব চক্রবর্তী(সংকেত, দক্ষিনেশ্বর), দেবব্রত ব্যানার্জি(বারাসাত কাল্পিক), অজয় দাস(গোবরডাঙ্গা চিরন্তন), বিশিষ্ট নাট্য গবেষক শান্তনু সাহা, মলয় বিশ্বাস(খাঁটুরা শিল্পাঞ্জলি), জীবন অধিকারী, অনিমেষ বসাক(করুনাময়ী মিশন), তাপস দাস(হাওড়া), সৌরভ চট্টোপাধ্যায়(থিয়েটার ওয়ার্কার্স রেপার্টরি, হাওড়া), বিশিষ্ট নাট্যবিদ কিরীট বর্ধন (কোলকাতা), বিশিষ্ট নাট্যকার কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ নাট্যজনের উষ্ণ অংশগ্রহণে আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিল গোবরডাঙ্গা সংস্কৃতি কেন্দ্র। পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ভারতে পাঠরত বাংলাদেশের নাট্যকর্মীরাও।

দুই বাংলার এই থিয়েটারের আড্ডায় উঠে এসেছে ওপার বাংলায় ঢাকার থিয়েটারের বাইরেও বাইরেও অনেক ভালো কাজ হচ্ছে, যেগুলি সর্বস্তরের মানুষের কাছে অতটা পৌঁছতে পারছে না, সে প্রসঙ্গও। একই রকম ভাবে এপার বাংলাতেও কলকাতার থিয়েটারের তুলনায় শহরতলি ও জেলার থিয়েটার তাদের নিজস্বতা বজায় রেখে বহু উল্লেখযোগ্য কাজ করছে।

ওপর বাংলার নাট্য শিল্পীদের কথায় বারবার করে উঠে এসেছে সেলিম আলদিনের গ্রাম বাংলার থিয়েটার তৈরির স্বপ্ন ও ভাবনার কথা। এর আগে গোবরডাঙ্গা নকসা শুধুমাত্র বাংলাদেশের থিয়েটার নিয়ে ২০১৬ সালে এক উৎসবের আয়োজন করেছিল, সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন নাট্য দলের প্রায় একশটি প্রচারপত্র নিয়ে একটি প্রদর্শনীর কথাও ওপার বাংলার নাট্যজনেরা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্বীকার করেছেন। বাংলাদেশের নাট্যজনেরা ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন যে তাদের দেশের থিয়েটারগুলি এদেশের মানুষের কাছে বেশি করে পৌঁছনোর জন্য গোবরডাঙ্গা সংস্কৃতি কেন্দ্রে তারা প্রতি তিনমাসে একবার করে দুই দেশের নাটক পাঠের আয়োজন করতে চান।

 বিগত চার পাঁচ বছর ধরে এই দুই বাংলার বিশেষত গ্রাম বাংলার থিয়েটারকে মিলিয়ে দেওয়ার এক নিরলস প্ৰচেষ্টা করে চলেছেন গোবরডাঙ্গা নকসার কর্নধার শ্রী আশিস দাস ও বাংলাদেশ গ্রূপ থিয়েটার ফেডারেশনের সদস্যরা।

দুই দেশের এই থিয়েটার আড্ডায় গোবরডাঙ্গা নকসার শিশু শিল্পীরা অনিল মন্ডলের নির্দেশনায় অভিনয় করেছিল “পুন্টবুড়ির ঘর” নামে একটি ছোট্ট নাটক। এরকম সুন্দর এক থিয়েটারের আড্ডায় একসঙ্গে অনেক মানুষকে একত্র করার জন্য গোবরডাঙ্গা নকসার এই আয়োজন সত্যি সাধুবাদের যোগ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 1 =