দুটি হাত একটি পা নেই, তবুও বিশ্বজয়ী ফ্রাঞ্চেস্কা
ইতালির পেরুজ্জিয়া শহরের কিশোরী ফ্রাঞ্চেস্কা যেদিন বলেছিল, ‘‘আমি অ্যাক্রোবেটিক পোল ড্যান্সার হবো’’, মা ভ্যালেরিয়ার বিশ্বাসই হচ্ছিল না। যার দুই হাত নেই, পা আছে একটা- সেই মেয়ে চায় এত কঠিন কাজে নামতে? ফ্রাঞ্চেস্কার জীবনের কিছু কথা রইল আপনাদের জন্য।
ফ্রাঞ্চেস্কার জন্মই হয়েছে দুই হাত আর এক পা ছাড়া। পায়ের একটা অংশ না থাকায় নকল পা লাগানো হয়েছে। কিন্তু নকল কবজি লাগানোর পরও তা ব্যবহার করতে রাজি হয়নি ফ্রাঞ্চেস্কা। নকল হাত নাকি তার ভালো লাগে না। সেই সকালে কী যে হয়েছিল ফ্রাঞ্চেস্কার এখনো বুঝতে পারেন না মা ভ্যালেরিনা। ঘুম থেকে উঠে এসেই বলে, ‘‘মা, আমি অ্যাক্রোবেটিক পোল ড্যান্সার হবো।’’ মেয়ের মুখে এমন কথা শুনে অবাক হলেও বিরক্ত হননি। বরং দুই হাতের কবজি আর একটা হাত না থাকার পরও মেয়ে যে এমন একটা স্বপ্ন দেখতে পারছে তা দেখে খুশিই হয়েছিলেন মা।
আর দশটা সাধারণ কিশোরীর মতো ফ্রাঞ্চেস্কারও ম্যাকডোনাল্ডসের খাবার ভালো লাগে, ভালো লাগে পপ গান শুনতে। ও দাঁতে ব্রেস পরে, গলায় পরে কালো নেকলেস। আর হ্যারি পটারের এমন ভক্ত যে কল্পনায় হ্যারি পটারের মতো অনেক কিছুই করে যায় সবসময়। তবে জীবন চলায় জাদুর ওপর কখনোই ভরসা রাখেনি। পেরুজ্জিয়া শহরের মেয়েটি জানে, সফল হতে হলে নিরলস পরিশ্রমে আস্থা রাখতে হবে তাকে।
ফ্রাঞ্চেস্কা সাধারণ কোনো অ্যাক্রোবেটিক পোল ড্যান্সার হতে চাইলে এতদিনে হয়ত হারিয়ে যেতো। কিন্তু মধ্য ইতালির পেরুজ্জিয়া শহরের মেয়েটি যত শেখে, শেখার আগ্রহ আরও বাড়ে তার। নিজের ঘরে তো অনুশীলন করেই, স্থানীয় জিমে গিয়েও প্রশিক্ষণ নেয় কোচ এলেনা ইম্ব্রোনিয়োর কাছে।
দুই হাত নেই। একটা পা না থাকায় কাজ চালাতে হয় নকল পা দিয়ে। তারপরও অ্যাক্রোবেটিক পোল ড্যান্সার হওয়ার স্বপ্নকে অজেয় মনে করেনি ফ্রাঞ্চেস্কা। তাই মাত্র ১৫ বছর বয়সেই সে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। হাত বা পা না থাকলেও যে অ্যাক্রোবেটিক পোল ড্যান্সার হওয়া যায়- তা এখনো কম মানুষই ভাবতে পারে।