নগ্ন গ্রাম

বিশ্বে এমন এক অদ্ভুত গ্রাম যেখানে কেউ কোনওদিন কাপড় পরেন না, হয়তো অদ্ভুত লাগছে নগ্ন গ্রামের বিষয় জানার পর। কিন্তু এটা সম্পূর্ন সত্যি ঘটনা। ব্রিটেনের হার্টফোর্ডশায়ারে অবস্থিত স্পিলপ্লাজ নামে এই গ্রামে প্রচলিত আছে এক অদ্ভুত রীতি। যেখানে আপনি নগ্ন হলেই মিলবে থাকার সুযোগ। কারণ, ওই গ্রামে কেউ কাপড়ই পরেন না। তাই সেখানে থাকতে চাইলে তাদের মতো করেই থাকতে হবে আপনাকে।
আন্দামানে জারোয়া বা দক্ষিণ আমেরিকায় ঘনজঙ্গলে কিছু আদিবাসী আছে যারা এখনও সভ্যতার ছোঁয়া পায়নি। তাদের ব্যাপার হলে ভিন্ন কথা ছিল। কিন্তু সভ্যতার পথপ্রর্দশক বলে যারা নিজেদের দাবি করে সেই যুক্তরাজ্যে এমন গ্রামের কথা শুনলে অনেকেই হয়ত অবাক হবেন।


তবে গ্রামবাসীরা অবশ্য নগ্নতার মধ্যে অসভ্যতার কিছু দেখেন না। আর যেখানে ইউরোপ-আমেরিকার সামনের সারির সভ্য দেশগুলোর শিক্ষিতরা নগ্নতার দাবিতে আন্দোলন করছেন, রাস্তার মধ্যে কাপড় খুলে ব্যানার হাতে টিভি ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন সেখানে ওই গ্রামবাসীকে অসভ্য বলার সুযোগই বা কোথায়? তারা তো নিজেদের মতো করে থাকছেন, কারও বাড়া ভাতে ছাই দিচ্ছেন না। এটা ওই গ্রামেরই মানুষের কথা।

প্রথম দর্শনে একে আর দশটি গ্রামের মতোই মনে হবে। ছবির মতো সুন্দর, বেশ পরিপাটি। কিন্তু আপনার ধারণা পাল্টাতে শুরু করবে যখন আপনি এই গ্রামের কোনও বাসিন্দার দেখা পাবেন। এই গ্রামের বাসিন্দারা গ্রামটিকে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে পুরনো নগ্নতাবাদী অঞ্চল বলে দাবি করেন। তাঁরা এতটাই নগ্নতাবাদী যে আপনি যদি তাদের মতের সঙ্গে একমত না হন তাহলে সেই গ্রামের কেউ আপনার কাছে জায়গা-জমি, বাড়ি-ঘর কিছুই বিক্রি করবে না।

সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, ওই গ্রামের মানুষ বেশ সচেতন এবং সৌখিনও। তারা গায়ে কাপড়ের কোনো পোশাক না পরলেও রোদ হতে চোখ বাঁচাতে সানগ্লাস ব্যবহার করেন! তাদের গলায় থাকে সোনার চেইন। এমনকি আঙ্গুলে আংটিও পরেন অনেকেই শখ করে! গ্রামের ভেতর বেশ সমৃদ্ধ বারও রয়েছে। তবে কারও গায়ে কোনো পোশাকই নেই!

সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, মোর-৪ নামে একটি টিভি চ্যানেল ওই গ্রামের বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা নিয়ে একটি ধারাবাহিক ডকুমেন্টরি নির্মাণ করছে। সে কারণেই নতুন করে আলোচনায় চলে আসে স্পিলপ্লাজ।
এই গ্রামের বাসিন্দা ৮৫ বছর বয়সী ইছিয়ুট রিচার্ডসন বলেন, আমি বুঝি না এটা নিয়ে এত হৈচৈ করার কি আছে। আমি তো অন্য গ্রামের সঙ্গে এই গ্রামের কোনও পার্থক্য দেখি না। ওরা যেভাবে জীবন ধারণ করে আমরাও সেইভাবে করি। সকালে ঘুম থেকে উঠি, দিনের কাজ শুরু করি, বাজারে যাই, পানশালায় যাই, দুধওয়ালা, পোষ্টম্যানরা আমাদের বাড়িতে আসে। সবই তো স্বাভাবিক। অস্বাভাবিক তো কিছু দেখি না। আমরা শুধু বস্ত্রহীন থাকি, এই যা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen + six =