ভাল নেই ওরা…
তনুময় চক্রবর্তী, উত্তরপাড়া, হগলী ##
আমপানের দাপটে ত্রাহি রব দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং উত্তর ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকায়। অসংখ্য মানুষের আজ মাথার উপরে চাল নেই, নেই খাওয়ার ব্যবস্থা, পরিধানের সংস্থান। সব হারিয়ে অসহায় মানুষগুলি। তাদের সাহায্যেও এগিয়ে এসেছেন অসংখ্য মানুষ বা সংস্থা। সেই ছবি দেখে স্থির শান্তির জীবনে স্বচ্ছন্দ হতে পারিনি আমরাও। তাই আমরাও ছুটে গিয়েছিলাম আমাদের সাধ্যমত মানুষগুলির পাশে দাঁড়াতে। সে এক সকরুণ অভিজ্ঞতা। আমরা কয়েকজন ভবঘুরে কুলাঙ্গারের দল চাঁদা তুলে জোগাড় করলাম মুড়ি, ছিঁড়ে, চানাচুর, বিস্কুট, ডিটারজেন্ট, ব্লিচিং, ওআরএস এবং স্যানিটারি ন্যাপকিন। আমাদের উৎসাহ দেখে একহাজার ন্যাপকিন দিলেন দোলন চৌধুরী। পকেটের রেস্ত কম, তাই খরচ বাঁচাতে সব ত্রাণের সামগ্রী বাইকে নিয়ে রওনা দেওয়ার কথা ভাবা হল। আমাদের বাইক দলের নেতৃত্ব দিলেন চিত্রগ্রাহক দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য। শেষমেশ একটি চার চাকা দিয়ে সহযোগিতা করলেন রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনের মিডিয়া সহযোগী সুদীপ মিত্র। সমস্ত ত্রাণ বিতরণ করা হল, পাথরপ্রতিমা ব্লকের প্রত্যন্ত অঞ্চল দিগম্বরপুর, রামগঙ্গা এলাকায়।
এই সময়ে আমাদের দেখা কিছু খারাপ এবং দুঃখজনক অভিজ্ঞতার কথা বলা যাক। প্রথম ঘটনাটি রাজনৈতিক। আমরা কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে ত্রাণ নিয়ে যাইনি। কিন্তু ত্রাণ বন্টনের সময়ে এক রাজনৈতিক দলের বাধার মুখে পড়তে হল আমাদের। আমাদের ত্রাণ তাদের মাধ্যমে দিতে হবে বলে নির্দেশ তাদের। কিন্তু আমরাও সেই দাবী মানব না, প্রয়োজনীয় মানুষের হাতেই তাদের প্রয়োজনের জিনিস তুলে দেব বলে সাফ জানিয়ে দিলাম। সেই বাধা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত অনেকটা জোর করেই বলা যায় কিছু পরিমাণ ত্রাণ আমরা দিতে পারি।
একে করোনা ভাইরাস ও চলতি লকডাউনে পকেট হয়েছে খালি। তার উপর আমপানের কামড়। বিপর্যস্ত দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সাধারণ গ্রামবাসী। ঘটনার বেশ কয়েকদিন পরেও বিদ্যুৎ কবে আসবে কেউ জানে না, মোবাইল চলছে না। পাথরপ্রতিমার মত এই এলাকার বহু গ্রাম এখনও অন্ধকারে ডুবে আছে। বিদ্যুৎ বোধহয় একটু বেশিই চাওয়া হয়ে গেল। গ্রামের মানুষ, ওদের গুরুত্ব কোথায়। তাই অন্যত্র যখন জামাই ষষ্ঠীর পাত সাজিয়ে যখন আমরা ছবি পোস্ট করছি। তখন এই এলাকার বহু মানুষ অভুক্ত, কোনও রকমে মুড়ি, ছিঁড়ে ও অপরিশ্রুত জল খেয়ে রাত কাটাতে হচ্ছে অনেককেই।
নোনা জলে ভর্তি চাষের ক্ষেত। সদ্য বুলবুলের ধাক্কা সামলে উঠেছিলেন চাষীরা। আবার সেই তিমিরে। আগামী চার পাঁচ বছরের এই জমিতে চাষ হবে না। ধার করে ফসল ফলিয়েছেন, সরকারের তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত নেই কোন সাহায্য। মানুষগুলির অবর্ণনীয় কষ্ট চোখে দেখা যায় না। এখনও বহু জায়গা ডুবে আছে জলে, বাড়ি থেকেও নেই। বহিরাগতদের সাহায্যের আশায় দিন গুনছেন সকলে। আসুন না আমরা একটু ওদের কথা ভাবি।যতটুকু পারি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিই।
ছবিঃ সুদীপ মিত্র।
Palash Da, Thank you very much for highlighting the present situation of cyclone AMPHAN distressed people. Most of the commercial media are not generating indepth study based news reports.
Chaichi Sabar sahojogita, Sustho bhabe beche thaka oder ODHIKAR
লেখাটা পড়লাম। অনবদ্য। দরদ দিয়ে লেখা, তাই ছুঁয়ে গেলো।